বর্তমানে সামাজিক পরিস্থিতি মহিলাদের করে তুলেছে কর্মমুখী। বলাবাহুল্য পেশাগত কারণে পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিতে মরিয়া মহিলারাও। আজ তারা অনেকটাই স্বাধীন। ঠিক সেই জন্যই আজকালকার আধুনিকারা অনেক বেশি বয়সে বিয়ে করছেন। ফলস্বরূপ প্রথমত বাচ্চা হতে নানা বাধা বিপত্তি দেখা দেয়। চিকিৎসা করাতে বহু সময় কেঁটে যায়। যদি বা হয় তাও হবে অনেক দেরিতে। এছাড়া বর্তমান সমাজে ফিগার সচেতন মহিলারা কম বয়সে মা না হওয়ার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই দম্পতির বয়স যখন অনেকটাই বেশি তখন তাদের সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখছে। সেই সন্তানটি যখন একটু একটু করে বড় হচ্ছে অর্থাৎ নিজস্ব একটা জগৎ সে যখন তৈরি করছে তখন বাচ্চাটি মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়ছে। কারণ তারই বন্ধুর বাবা-মা কমবয়সী হওয়ার ফলে অনেক বেশি তৎপর এবং এনার্জিটিক। আগেকার দিনে বাবা-মায়ের বয়স খুব কম থাকায় তাদের বয়স হওয়ার আগেই তার বাচ্চাটি অনেক বড় হয়ে যেত। ফলে তাদের বাবা মায়ের বয়সের আগেই তারা অনেকবেশি স্বাবলম্বী হয়ে উঠত। কিন্তু এখনকার দিনে বেশি বয়সে বিয়ের ফলে তার বাচ্চা মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরতে না পেরতে তার বাবা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময় হয়ে যায়। ফলে সেই বাচ্চাটিকে খুব অল্প বয়সে রোজগারের পথ দেখতে হয়। তার স্বপ্ন পূরণের আগেই বাস্তব মানসিক চাপ তাকে কর্মমুখী করে তুলছে। ফলে সে অল্প বয়সেই হয়ে উঠছে জেদী এবং মেজাজী। অতএব বেশি বয়সে সন্তান ধারণ সমস্যাটাই বেশি।
অন্যদিকে, এখন প্রায় প্রত্যেকেই কাজের চাপে এতটাই ব্যস্ত যে প্রকৃত বয়সের তুলনায় অনেকটাই বুড়িয়ে যাচ্ছি। ফলে আরও বয়স্ক লাগছে। ফলে নিজেকে আমরা তরতাজা রাখতে পারছি না। এছাড়া বেশি বয়সের বাবা-মা হলে যে সকল শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতি তৈরি হয়, সঠিক বয়সের বাবা মায়ের ক্ষেত্রে সে সমস্যা অনেকটাই কম হয়। বাচ্চার সঙ্গে বাচ্চার মতো মিশতে হবে। বেশি বয়সী বাবারা অধিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং গম্ভীর হওয়ায় বাচ্চারা তার সঙ্গে কথা বলতে ও মিশতে ভয় পায়। এঘটনা সকলকেই মাথায় রাখতে হবে। বিশেষ করে ১৪-১৫ বছর পর্যন্ত ছেলে-মেয়েরা বাবা মায়ের প্রতি নির্ভরশীল হওয়ায় বাবা এবং মাকেও তাদের সঙ্গে সময় দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। বেশি বয়সী বাবা-মায়ের যে সকল দিকে নজর দিতে হবে তা হল বাচ্চার সঙ্গে বাচ্চার মতো মিশতে হবে। অথবা বাচ্চার মনে ভয়, হতাশা, উদ্বেগ যাতে না জন্মায় সেদিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সকল কাজে উৎসাহ দিতে হবে। বাচ্চার প্রয়োজনীয় জিনিস দিতে হবে বাচ্চার আগ্রহে। বাচ্চার স্বাস্থ্যের দিকে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সর্বোপরি নিজেদের বয়স ভুলে গিয়ে কম বয়সীদের মতো বাচ্চার সঙ্গে খেলায় মেতে উঠতে হবে। অর্থাৎ অনেক বেশি কর্মঠ, তরুণ বাবা মায়ের ভূমিকা পালন করতে হবে। নচেৎ সন্তান বড় হলে সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়বে। জীবনে কোনো দিনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না।