নেফ্রাইটিস একটি কিডনির অসুখ, নেফ্রাইটিস হল কিডনির প্রদাহ (ইনফ্লামেশন)। নানা ধরনের ইনফেকশানের বা ইমিউনোলজিক্যাল কারনেই বাচ্চাদের এই রোগটি হয়। স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকসনের কারনে বাচ্চাদের এই রোগ হয়। এছাড়া হাম, মাম্পস, হেপাটাইটিস, এইচ আই ভি, ম্যালেরিয়ার মতো কিছু অসুখের সংক্রমণ থেকেও এগুলি দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ার জন্য কিংবা বংশগত কারণেও নেফ্রাইটিস হতে পারে।
এই অসুখের লক্ষণ হল মুখ, হাত, পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, ঘনঘন ও খালি চোখে তা দেখা যায় না। বমিভাব, জ্বর, মাথার যন্ত্রনা ইত্যাদি। রোগটি জটিল হতে থাকলে খিদে কমে যায়, বমি, পিঠে ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথাও দেখা দেয়। নেফ্রাইটিস নানা রকমের হয়। যেমন লুপাস নেফ্রাইটিস, নেফ্রাইটিস সিনড্রোম, ইনফেকটিভ নেফাইটিস, পাইলো নেফ্রাইটিস, ইনটারিস্টিয়াল নেফ্রাইটিস ইত্যাদি। লুপাস নেফ্রাইটিসে মুখে ঘা, ব্যাথা, গাঁটে ব্যথা থাকে। মস্তিষ্কের অসুখ বা মৃগী হতে পারে, রক্ত পরীক্ষা কিডনির বায়োপসি করে ও কখনও কখনও রোগ নির্ণয় করতে হয়। নেফ্রাইটিস সিনড্রোমে কিডনির ফিল্টার করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তখন প্রস্রাবের সাথে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর ভীষণ ফুলে যায়। এর সঙ্গে রক্তে প্রোটিন কম এবং চর্বি বেশি হয়ে যায়। এই রোগ নির্নয়ের জন্য প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ ও কিডনি ফাংশন টেস্ট করা প্রয়োজন।
এই ইনফেকশনের জন্য শিশুর গলায় ব্যথা, কাশি, ত্বকে র্যাশ বের হয়। এরপর চোখ ফুলে যায়। লাল রঙের প্রস্রাব হয়। পাইলোনেফ্রাইটসে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, কোমরে ব্যথা, প্রস্রাবে যন্ত্রনা থাকে। প্রস্রাবের সংক্রমণের জন্যই এই সমস্যা হয়। শিশুর জন্মগত শারীরিক ত্রুটির জন্য প্রস্রাব সামনে দিয়ে না গিয়ে পিছনের দিকে যায় তাতে ক্ষতি হয় কিডনির। রোগ নির্ণয়ের জন্য ইউরিন কালচার ও আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এছাড়াও আছে আই জি এ নেফ্রোপ্যাথি। এর সাথে যুক্ত থাকতে পারে পেট ও লিভার ও ত্বকের অসুখ। আছে হেনোকস্কোলিন পার পুরা, বংশগত নেফ্রাইটিস ইন্টারসিটিয়াল নেফ্রাইটিস, নেফ্রাইটিসের চিকিৎসকের মূল লক্ষ্য ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কমিয়ে আনা হয় যতটা সম্ভব কিডনির ক্ষতি হওয়া আটকানো তাই এই রোগে নুন (সোডিয়াম) কম খেতে হবে। শিশুর অস্বাভাবিক ওজন ও প্রস্রাবের সময় কান্নাকাটি করলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার। হোমিও চিকিৎসা- হোমিওপ্যাথিতে নেফ্রাইটিস এর ভালো চিকিৎসা রয়েছে। যে সমস্ত ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয়। এপিসমেল, একোনাইট, বেলেডোনা বারবারিস ভালগারিস, লিথিয়াম কাঠ, ম্যাগফম কান্থারিস লাইকোপডিয়াম, সারসাপোবিলা মার্ক সল, থুজা, ইক্যুইজিটাম, প্রভৃতি, তবে কখনই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ চিকিৎসা তাঁর অভিজ্ঞতার আলাদা ওষুধের শক্তি নির্বাচন করে থাকে।