Tuesday, September 24, 2024
Homeমানসিক স্বাস্থ্যদুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় | Anxiety | Anxiety Symptoms | Anxiety Disorder...

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় | Anxiety | Anxiety Symptoms | Anxiety Disorder | Social Anxiety | Anxiety Attack Symptoms

সময়ের সঙ্গে পাঁ মেলাতে গিয়ে হাসফাস করছে মানুষ। ভোগবাদী মানুষ। তার আরো চাই আরো। যেন শেষ নেই। আবার চাওয়া-পাওয়ার হিসেব আর হারানোর ভয়েও সন্ত্রস্ত মানুষ। শিকার হচ্ছেন টেনশনের। সময়ের চাহিদা- বল্গাহীন আকাঙ্ক্ষা। পরিণতি সীমাহীন টেনশন। চাইলেও যার থেকে মুক্তি নেই। 

টেনশন কেন হয়

টেনশন হল একরকম উৎকণ্ঠা। কোনো খারাপ কিছুর আশঙ্কা। আক্ষরিক অর্থে টেনশন হল মানসিক পীড়ন, চাপ বা চাপা উত্তেজনা। ডাক্তারি মতে, শরীর ও মনের গতিবৃদ্ধি, যা মোটেই সুখকর নয়। কারণ বা অকারণ যাই হোক না কেন, টেনশনের জন্য দায় কিন্তু মস্তিষ্কের দু’টো অংশ। সেরিব্রাল কর্টেক্সহাইপো থ্যালামাস। সেরিব্রাল কর্টেক্স আমাদের সাহায্য করে চিন্তা। হাইপোথ্যালামাস হৃদস্পন্দন , অন্ত্রের পেরিস্টলসিসি, পাকস্থলি এবং শ্বাসকার্য চালানোর জন্য ফুসফুসের সঙ্কোচন ও প্রসারণের কাজ করে। এছাড়া আছে নিউরো ট্রান্সমিটার ও নিউরো রিসেপ্টরের ভূমিকা। যাদের প্রভাব মনের গতিবিধির ওপর, কারণ এরাই তো মনকে পরিচালনা করে। মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সের সঙ্গে হাইপো থ্যালামাসের

সোজাসুজি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে হাইপো-থ্যালামাস কর্টেক্সের সঠিক নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে ফলে বেড়ে যায় আমাদের মানসিক চাপ বা টেনশন।

গোড়াপত্তন

টেনশনের গোড়াপত্তন হয় জন্মমুহূর্ত থেকেই। মাতৃ গর্ভে শিশু থাকে এক বিশেষ সুরক্ষার মধ্যে। দশমাস দশদিন শিশুকে বেঁচে থাকার কোনো চেষ্টাই করতে হয় না— এক নিরাপদ ঘুমের রাজ্যে তার বাস। কিন্তু জন্ম মুহূর্ত হেকেই তাকে নানান প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। মাতৃগর্ভ থেকে আলোর পৃথিবীতে আসার মুহূর্তটি শিশুর কাছে তাই বড় বেদনাদায়ক। আর সেই ক্ষণ থেকেই শুরু হয় টেনশন। অর্থাৎ জন্মলগ্ন থেকেই শুরু মানুষের টেনশন। সিগমন্ড ফ্রয়েড বলেছেন, শিশু তার অপরিণত শরীর ও মন নিয়ে এই পৃথিবীতে অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে আবির্ভূত হয়। মাতৃগর্ভের ঘেরাটোপে সে থাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। জন্মলগ্ন থেকেই সুচনা হয় তার অসহায়তা, ভয় ও টেনশন।

কেন এত টেনশন?

জীবন ও জীবনযাত্রা যত আধুনিক হচ্ছে, যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ততই বাড়ছে মানসিক চাপ টেনশনের পারদ। আজ জীবনে নানা চাপ, প্ৰতিযোগিতার দৌড়, পাওয়ার সঙ্গে না পাওয়ার সংঘাত, জনবিস্ফোরণ, বেকারি, সাফল্যের চাহিদা, পরিবেশের চাপ— সবই বাড়িয়ে তুলছে টেনশন। শরীরের সঙ্গে মনের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। বিভিন্ন মানুষের মনও বিভিন্ন, সমস্যা আলাদা আলাদা। মনের গতিবিধি অনুযায়ী মানুষকে এ-টাইপ ও বি-টাইপ দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। হাই-অ্যাম্বিয়েন্ট টেনশনে ভোগেন এ-টাইপের মানুষজন। লো-অ্যাম্বিয়েন্ট টেনশনে

ভোগেন বি-টাইপের মানুষজন। এ-টাইপের মানুষজন কোনো টেনশন সহ্য করতে পারেন না। অল্পেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন, রাগারাগি করেন, মারমুখী হয়ে ওঠেন। ঠাণ্ডা মাথায় কোনো কিছু চিন্তা -ভাবনা করতে পারেন না। বলা যেতে পারে তাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ছোটোখাটো কারণ বা অকারণে এরা টেনশনে ভোগেন এবং অপরকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। এমনকি এই টেনশনের বহিঃপ্রকাশ হয় প্রচণ্ড।

বি-টাইপ মনের গতিবিধি যাদের, তারা অকারণে টেনশনের বলি হন না এদের থাকে স্বচ্ছ দৃষ্টি, স্বভাব বেশ শান্ত, একটু বিলাসী বা আয়েসিও হন।

বিজ্ঞান বলছে, এ-টাইপের অধিকারীরা সাধারণত হন প্রতিযোগী মনোভাবাপন্ন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এবং আমিত্ব প্রধান। রক্তে লাইপোপ্রোটিন, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি। বি-টাইপেরা ঠিক এর উল্টোটা— এদের সহজে রাগ হয় না। মানসিক উত্তেজনা খুব কম সময়ই এদের সীমারেখা অতিক্রম করে। 

টেনশন চিরকালই ছিল। সেই মানুষের উৎপত্তিকাল থেকেই। কিন্তু গভীরতা বা চাপ এত ব্যাপক, এত সাংঘাতিক ছিল না। বর্তমানে টেনশন আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে ঘিরে ধরেছে সাইলেন্ট কিলার হয়ে সারা পৃথিবী জুড়ে এখন টেনশনের সাম্রাজ্য।

শিশুর টেনশন

শিশুদেরও টেনশনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই। যে কোনো মুহূর্তেই তারা টেনশনের শিকার হতে পারে। হঠাৎ কোনো আওয়াজ হলে শিশু চমকে ওঠে আর শুরু হয়ে যায় টেনশন। সে ভাবতে থাকে আবার হয়তো আওয়াজ হবে। এই যে ছোট্ট শিশুদের নিয়ে ওকে লোফালুফি করেন বা  জোর করে দোল দেন, এটাও কিন্তু শিশুদের টেনশন বাড়ায়। এমনকী কোনো পরিচিত জিনিস বা ব্যক্তিকে বিকৃত অবস্থায় দেখলে, জন্তু জানোয়ার কিংবা অন্ধকার, মায়ের কাছ ছাড়া হওয়ার ভয়—সবই শিশুদের টেনশন বাড়ায়। 

টেনশন বড় শিশুদের

বয়সের সঙ্গে শিশু একটু একটু করে সব কিছু বুঝতে শেখে বা বোঝার চেষ্টা করে। এই বয়সটি শিশুদের মানসিক অবস্থার গঠন পর্ব। তাই এই সময়ের সমস্ত ঘটনা প্রবাহের ফল তাদের অনেক দূর বয়ে নিয়ে যেতে হয়—যা ভবিষ্যতের ভালমন্দ তৈরিতে সাহায্য করে। এই বয়সেই শিশু বাড়ির সকল বিষয়ে লক্ষ্য রাখে এবং তার সঙ্গে নিজেকে সবার অলক্ষ্যে জড়িয়ে ফেলে। তাই তার বেড়ে যায় টেনশন—যখন বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, বাবা কিংবা মা’র ফিরতে যদি দেরি হয়। আবার অহেতুক চিৎকার বা ঝগড়া ঝাটি, বাবা-মা’র মধ্যে অশান্তি, বাবা-মা’র কোনো কারণে ভয়, সবই তাকে ভাবায়, টেনশনে রাখে। আরো দুটো দিক আছে যা এই বয়সের শিশুদের টেনশন বাড়াবার পক্ষে যথেষ্ট।

তা হল বাবা-মা’র ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয় আর বন্ধুবান্ধব বা সহপাঠিদের কাছে ছোট হয়ে যাবার ভয়।

মানুষের জীবনে টেশনের ফিরিক্তি অনেক লম্বা। মুক্তি পাওয়া বেশ শক্ত। কারণ ভয় বা ভীতি জন্ম দেয় টেনশনকে। মানুষ যতদিন সচল থাকবে, ততদিন থাকবে ভয়। থাকবে টেনশন।

রোগের ভিত গড়ে টেনশন

জীবনে ছোটখাটো টেনশনের প্রয়োজন হয়তো আছে। সেই টেনশন কখনও হয়তো আমাদের সাফল্যের সিঁড়ি-ভাঙার পক্ষে সহায়ক। কিন্তু সমস্যা হয় সেই টেনশন যখন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে, মনের শান্তি ভেঙেচুরে নষ্ট করে দেয়। সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় মানুষের সঙ্গে মানুষের। জীবনের রঙ হয়ে ওঠে বিবর্ণ। নষ্ট করে দেয় জীবনের ভালোলাগা বোধ— জীবনকে মনে হয় একটা বোঝা, বাঁচা-মরা সমান। অথচ টেনশন একটা সাময়িক অবস্থা। কিন্তু তার উপস্থিতি ভয়ঙ্কর। মন ও শরীর অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আধুনিক মনোবিজ্ঞানীরা তাই বলছে, এখন আমাদের অধিকাংশ রোগের প্রধান কারণ এই টেনশন। যেসব রোগগুলোর কারণ হিসেবে টেশনকে যথেষ্টই দায়ী করা যেতে পারে সেগুলো হল— অনিদ্রা, হার্ট অ্যাটাক, মাথার যন্ত্রণা, ব্লাডসুগার, মিউকাস কোলাইটিস, সেপটিক আলসার আলসারেটিভ কোলাইটিস, হাঁপানি, গর্ভপাত, মহিলাদের ঋতুচক্রের গণ্ডগোল, যৌন সমস্যা, শয্যামূত্র ইত্যাদি। টেনশনের মাত্রা বেড়ে গেলে হাত-পা কাপা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, হাত-পা ঠাণ্ডা কিংবা গরম হয়ে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ কোনোটাই অস্বাভাবিক নয়। 

student stress concept illustration 114360 8908 transformed 1

প্রয়োজন চিকিৎসারও

টেনশনের ভয়ঙ্কর কামড় খেতে হয় প্রায় সবাইকে। তবে একটা জিনিস, মনের মধ্যে টেনশনে ভোগা আর তুচ্ছ কারণে দীর্ঘদিন টেনশনে ভোগার মধ্যে অনেক তফাত। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা দেখেছেন যারা দীর্ঘদিন ধারাবাহিকভাবে টেনশনে ভোগেন তারা আস্তে আস্তে মনোরোগের শিকার হয়ে পড়েন। বিশেষ করে এরা মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেসিভ ইলনেসে ভোগেন বেশি। মানসিক অবসাদের লক্ষণগুলো হল মনে আনন্দ-ফুর্তির অভাব, ভীষণ নার্ভাস লাগা, গল্প-আড্ডা -হইহই কিছুই ভালো লাগে না, একটা প্রচণ্ড হতাশ, বেঁচে না থাকার ইচ্ছা। 

আত্মহত্যার প্রবণতা। এ সবের পিছনে কিন্তু টেনশন। তাই যারা ধারাবাহিকভাবে টেনশনে ভোগে তাদের অবশ্যই কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের

পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ঠিক সময় তাদের সাহায্য পেলে উপকার পাওয়া যায়। মনে রাখতে হবে মানসিক অসুখ অন্য দশটা অসুখের মতোই অসুখ।

প্রতিরোধ

টেনশন একটা সাময়িক অবস্থা। যতই বেদনাদায়ক হোক না কেন এই টেনশন কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই আপনা আপনিই কমে আসে। একটু প্রস্তুতি নিতে পারলে কখনও কখনও তা কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিছু দুঃখ-ব্যাথা-বেদনা-শোঁক হয়তো জীবনভর থাকে কিন্তু টেনশন ক্ষণস্থায়ী। লক্ষ্য রাখবেন টেনশন যেন স্থায়ী না হয়। তাই টেনশন থেকে মুক্তি পাবার তেমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই তবে স্বাভাবিক নিয়ম মেনে চললে টেনশনের আক্রমণ কম হবে অথবা টেনশন মুক্ত থাকা যাবে।

একই বৃন্তে দুটি ফুল—শরীর ও মন 

মন ও শরীর পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এককে বাদ দিলে অন্যের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ে। দেখা যায় মনের প্রতিটি ঘাত-প্রতিঘাতের সঙ্গে শরীরের এক ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। তাই শরীর ঠিক রাখতে হলে উচিত মনের যত্ন নেওয়া মনের যত্ন নেবার কতকগুলো প্রক্রিয়া আছে। মনকে আনন্দের মধ্যে রাখুন। সময় করে রোজ কিছুক্ষণ ঘাম ঝরান, হাঁটুন বা খালি হাতে ব্যায়াম করুন। প্রয়োজন হলে প্রথম কয়েক মাস কারুর পরামর্শ নিয়েই ব্যায়াম করুন।

দৈনন্দিন কাজের পরিকল্পনা 

প্রতিদিন কী কী কাজ করবেন আগে থেকে তা ভেবে রাখুন বা একটা পরিকল্পনা করুন। সময়ের কাজ সময়ে না করা বা অগোছালোভাবে দিন বা মাসের কাজকর্ম করার ফলে আমরা অনেক সময় অযথা টেনশনে ভূগি। তাই সারাদিন কী কাজকর্ম করবেন তার একটা পরিকল্পনা থাকা দরকার। খাতা-কলমে না লিখলেও মনে মনে সাজিয়ে রাখুন। একটা মানসিক পরিকল্পনা থাকা সবসময় ভালো। এর ফলে সময় বাঁচে, সুস্থভাবে শেষ হয় কাজটি, মন হালকা হয়— চাপ থাকে না টেনশনের।

সুস্থ পরিবেশ।

পরিবেশ মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। পরিবেশই পারে একজন মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে। বাইরের পরিবেশ আমার আপনার অসুবিধেকে তোয়াক্কা  করে না কিন্তু যেটুকু পরিবেশ আমার-আপনার হাতের মুঠোয় তাকে সুস্থ ও সুষ্ঠ রাখার দায়িত্ব আমার-আপনার বেশি শব্দ, হৈ-হট্টোগোল, চিৎকার আমাদের মনঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটায় এবং ধৈর্য কমিয়ে দেয়, ফলে সামান্য ব্যাপার বা কারণে টেনশনের শিকার হই। পরিবেশের মধ্যে যাতে এসব না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। যে বাড়ি বা ঘরে থাকবেন তার আলোবাতাস যেন স্বাভাবিক থাকে— খুব বেশি বা খুব কম দুটোই খারাপ। ঘরদোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার। গান শুনুন—ভালো লাগা বা প্রিয় গান সব টিভির সামনে বসে না থেকে একটু হেঁটে আসুন। সুগন্ধ ব্যবহার করতে শিখুন ভালোলাগা গন্ধ আপনাকে সতেজ রাখবে। দেখবেন ছোটখাটো ব্যাপারে টেনশন-ফ্রি।

বিনা কারণে বা অল্প কারণে ভয়

ভয়ের সঙ্গে টেনশনের গভীর যোগাযোগ। কারণ ভয় থেকে উৎপত্তি হয় টেনশনের। যে যতই বলুক না কেন ভয় মুক্ত পৃথিবী, কিছুতেই সম্ভব নয়। তবে ধীরস্থির ভাবে ঠান্ডা মাথায় বসে দেখলে বেশির ভাগ ভয়কেই কিন্তু মনোভাব বদলের মধ্যে দিয়ে জয় করা যায়। আর তাই বিশেষ পরিস্থিতিতে মনোভাব বদলই টেনশন জয়ের আসল চাবিকাঠি।

যোগাসন ও ধ্যান

টেনশন কমাতে যোগাসন ও ধ্যান-এর উপকারিতা অপরিসীম। তবে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বিশেষ প্রয়োজন। প্রাণায়াম, সর্বাঙ্গাসন এবং নিশ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামও বিশেষ উপকারী। নির্জন কোনো ঘরে দশ পনেরো মিনিট চিন্তাশূন্য হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করলেও উপকার পাবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে শোবার আগে দু’বার মনোসংযোগ করতে পরলে সুফল পাবেন। 

বিশ্রাম

যে কাজই করুন না কেন বা যতই ব্যস্ত হোন না কেন, একটু নির্ভেজাল বিশ্রাম অপনার দরকার। রোজ একটু শবাসন করুন—অল্পবিস্তর টেনশনে উপকার পাবেন।

হুঁশিয়ার থাকুন

যে কাজটা আপনার দ্বারা হবে না, প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গেই অন্যকে জানিয়ে দিন। গোপন করলে যে অলসতা আসবে তা হবে লজ্জাজনক। টেনশন বাড়াবে। এই ক্ষেত্রে অন্যের উপকার করতে গিয়ে নিজেরই টেনশন যাবে বেড়ে। তাই নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন হোন। দায়িত্ব নিলে নিজের ক্ষমতা সম্বন্ধে সচেতন থাকলে কোথায় টেনশন। 

সুসম্পর্ক –

কী কর্মক্ষেত্র, কী সামাজিক জীবন, সর্বত্রই প্রতিটি মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলুন। মাঝে মধ্যে দরকারের চাইতে একটু বেশিই হেসে কথা বলুন। দেখবেন টেনশন আপনাকে ছুঁতে সাহস পাচ্ছে না।

পরিবারকে ভালোবাসুন

পরিবারের প্রত্যেকের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলুন। প্রত্যেকের সমস্যাকে মর্যাদা দিয়ে দেখার চেষ্টা করুন। সমাধানে যৌথ প্রচেষ্টা চালান। দেখবেন পরিবারে অপার শান্তি। স্বর্গের শান্তি- খুঁজে পাবেন না টেনশন।

স্বপ্ন দেখুন 

স্বপ্ন দেখা কিন্তু ভালো। তবে স্বপ্নের জগতে ভেসে যাবেন না, মাটিতে পা রাখুন, দেখবেন ভালো লাগছে। টেনশন আপনাকে ছুঁতে ভয় পাবে। আপনি তো স্বপ্ন দেখছেন, সেই জগতে টেনশন কোথায়।

স্বার্থপর হবেন না

স্বার্থপররা ভীষণ টেনশনে ভোগে। এর কারণ তাদের নিজস্ব স্বার্থের হিসেবপত্তরে একটু গন্ডগোল হলে বা হবার চান্স থাকলে টেনশনের মিটার বাড়তে থাকে। এবং টেনশনের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই স্বার্থপরতা থেকে নিজেকে মুক্ত করুন, আর মুক্ত থাকুন টেনশন থেকে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular