Sunday, June 16, 2024
Homeস্বাস্থ্য পরামর্শস্বাস্থ্যসম্পর্কিত খবরBlood Sugar: সুগার বাড়লে নাকি কমলে বিপদ বেশি ?

Blood Sugar: সুগার বাড়লে নাকি কমলে বিপদ বেশি ?

“মধুরাতা ঋতায়তে, মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ, মাধ্বীর্ণ সন্তোষধি, মধুবৎ পার্থিবং রজঃ”—অর্থাৎ সকলের প্রার্থনা যেন বাতাস মধুময় হয়। সিন্ধু বা সাগরে প্রবাহিত হোক মধুর স্রোত, ওষুধ যেন রোগীর ক্ষেত্রে মধুর মতো কাজ করে, পৃথিবীর ধূলিকণাও যেন মধুময় হয়। তাই বলে আমরা কখনোই চাইব না যে দেহে বা রক্তরসে যেন বেশি করে মধু বা শর্করা ক্ষরিত হোক। কারণ রক্তে সুগার বৃদ্ধি পেলে মারাত্মক সব উপসর্গ দেখা দেয়, যাকে বলে ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রোগ।

মধুমেহ রোগটা কেন হয়

জানার আগে এর ইতিহাসটা একটু জেনে নিই । খ্রিস্টের জন্মের প্রায় পনেরোশো বছর আগে মিশরীয় চিকিৎসক প্যারিরাস সর্বপ্রথম একটি অদ্ভুত উপসর্গের ব্যাপারে আলোকপাত করেন, যেটার প্রধান লক্ষণই ছিল অতিরিক্ত পরিমাণে ঘন ঘন প্রস্রাব নির্গত হওয়া। খ্রিস্টের জন্মের তিরিশ বছর পূর্বে সেলসাস বহুমূত্র রোগের বিষয়ে আলোকপাত করেন। কিন্তু গ্রীক চিকিৎসক অ্যারিটিয়াসই এই রোগের প্রথম নামকরণ করেন ডায়াবেটিস মেলাইটাস।

ভারতীয় চিকিৎসকরা নামকরণ করেন মধুমেহ। নামটি কাব্যিক হলেও রোগটি মারাত্মক । মধুমেহ নামকরণ হওয়ার প্রধান কারণ রোগীর প্রস্রাব হয় ঘন, মধুর মতো গাঢ়, মিষ্টি। ঘন এবং মিষ্টি—এই কারণে দেখা যায় ডায়াবেটিক রোগীদের প্রস্রাবে পিঁপড়ে ধরে। প্রস্রাবে মিষ্টি গন্ধও বেরোতে দেখা যায়। ডায়াবেটিস নানা কারণে হতে পারে। রোগটিকে বংশগত বলা চলে। এছাড়া চিন্তাভাবনা, হাইপারটেনশন, স্ট্রেস থেকেও রোগটি হতে পারে। এমনও দেখা গেছে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কিংবা কোনো অপারেশনের কারণে রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে ডায়াবেটিস রোগটি ধরা পড়েছে

আমাদের খাদ্যের অন্যতম উপাদান শর্করা। ভাত, আলু, মিষ্টি চিনিতে রূপান্তরিত হয়ে দেহের নানান কোষকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। এই চিনি বেশি হলে লিভারে জমা থাকে গ্লাইকোজেন আকারে। অর্থাৎ লিভার হচ্ছে চিনি বা গ্লাইকোজেনের স্টোর হাউস এবং যখনই দেহে চিনির ঘাটতি হয় লিভার সেটা সরবরাহ করে। দেহে চিনির অভাব ঘটলে লিভার আর গ্লাইকোজেন জোগাতে পারে না। সেজন্য চিনির পরিমাণ সব সময় স্বাভাবিক রাখা

দরকার।

আমাদের দেহে নানান অর্গান আছে যাদের সম্মিলিত কার্যকারিতায় দেহ নীরোগ ও সুস্থ থাকে। এমনই একটি প্রয়োজনীয় অর্গান হল পাকস্থলির নীচে অবস্থিত প্যাংক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়। এই প্যাংক্রিয়াসের মধ্যে অবস্থিত বিটা কোষগুলো এক ধরনের রস ক্ষরণ করে যাকে ইনসুলিন বলে। এই ইনসুলিন রক্তের চিনির মাত্রা সঠিক রাখে। ইনসুলিনের অভাব হলে চিনির মাত্রা বাড়ে এবং বেশি বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস – হয়।

সাধারণত ডায়াবেটিসের দু’রকম সমস্যা তৈরি হয়—অ্যাকিউট এবং ক্রনিক সমস্যা। অ্যাকিউট সমস্যায় ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস হতে পারে। যাদের টাইপ-ওয়ান ডায়াবেটিস বা যারা ইনসুলিন ডিপেন্ডেন্ট, তাদের হয়। অন্যটায় হাইপার অসমোলার কোমা হতে দেখা যায় ৷ এই দুই ক্ষেত্রেই সুগার খুব বেশি বেড়ে গিয়ে জীবন সংশয় হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোলাইট সংক্রান্ত গন্ডগোল দেখা যায় এবং এর থেকে কোমা ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

দীর্ঘকালীন যে কমপ্লিকেশনগুলো দেখা যায় তার মধ্যে—

অপেক্ষাকৃত কম বয়সে ছানি পড়তে পারে। চোখের প্রেসার বাড়তে পারে, গ্লুকোমা হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হতে পারে। গ্লুকোমা ও রেটিনোপ্যাথির জন্য বছরে একবার করে চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত এবং রেটিনা ও চোখের প্রেসারকে ভালো করে মনিটর করা উচিত। যে ভাবে চোখের ডাক্তার বলবেন সেভাবে তার পরামর্শ ফলো করা উচিত। তা না হলে হঠাৎ করে অন্ধত্ব এসে যেতে পারে।

Blood Sugar Levels Defined

কিডনির সমস্যা যেটা হয় ডায়াবেটিসের কারণে, কিডনি থেকে প্রোটিন লিক করতে পারে। এভাবে প্রোটিন লিক করতে করতে ডায়াবেটিক রেনাল ফেলিওর হতে পারে। এই জন্য ভালো করে ব্লাডসুগার ও ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা ধূমপান করেন তাদের ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ওজন কমাতে হবে। ডায়াবেটিক কিডনি ডিজিজে এইগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চোখের মতো কিডনির জন্যও রক্তের ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিনের অ্যালবুমিন পরীক্ষা প্রতি বছর করে নেওয়া উচিত। এই পরীক্ষাগুলো দেখে ডাক্তাররা বুঝতে পারেন কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। যদি সমস্যা হয় যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

স্নায়ুর সমস্যা শুরু হয় পা দিয়ে। এটাকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বলা হয়। পা ঝিনঝিন করা, অসাড় হয়ে যাওয়া, জ্বালা করা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। এছাড়া চোট-আঘাত লাগলে বুঝতে পারছেন না, এর জন্য ব্লাডসুগার কন্ট্রোল করা জরুরি। পায়ের যত্ন নেওয়াটা খুব দরকার। ডায়াবেটিসের কারণে পায়ের সে সমস্যা হয় তার জন্য দায়ী থাকে নিউরোপ্যাথি। প্রতিদিন পা ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে, খালিপায়ে হাঁটাচলা করা উচিত নয়। ডায়াবেটিসে যে ধরনের জুতো পরা দরকার সেই জুতোই পরতে হবে। জুতো থেকে কোনো ফোস্কা যেন না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নখ ঠিকমতো কাটতে হবে। পা ফেটে যাচ্ছে বা হাজা হচ্ছে, এরকম যেন না হয়। এই কারণে পায়ের যত্নে খেয়াল রাখতে হবে। আর ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পায়ের জন্যও কিন্তু স্মোকিং বন্ধ করতে হবে।

হার্টের সমস্যা ডায়াবেটিক রোগীদের বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই সুগার কনট্রোলে রাখতে হবে, প্রেসার ঠিক রাখা দরকার, কোলেস্টেরল থাকলে ওষুধ খেতে হবে। ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

স্কিনের সমস্যাও ডায়াবেটিস রোগীদের হতে দেখা যায়। এছাড়া ফাঙ্গাল সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ডায়াবেটিস থাকলে। এই কারণে সুগার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিষ্কার থাকাটা জরুরি। ডায়াবেটিক রোগীরা পা বার বার ভেজাবেন না আর ভেজালেও পা পরিষ্কার করে মুছে শুকনো রাখবেন।

ডায়াবেটিস হলে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। স্মোকিং করা, নিয়মিত প্রেসার না মাপা, অ্যালকোহল বন্ধ না করা কিংবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করা ইত্যাদি স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ বেড়ে যায় সেরিব্রাল স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা।

ডায়াবেটিক রোগীদের হাইপ্রেসার থাকলে অনেক সময় এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না তবে কিছু কিছু সময় মাথার পিছন দিকে ব্যথা করে। নিয়মিত প্রেসার পরীক্ষা করা এবং প্রেসারের ট্যাবলেট খাওয়া উচিত। ওজন বেশি, এমন টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত পরিশ্রম ও ব্যায়াম করা দরকার। দেখা গেছে ওজন কমার সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে আসে এবং জটিলতা কমে যায়।

ব্লাডসুগার বেড়ে যাওয়া নিয়ে আমরা যেমন চিন্তিত হই তেমন রক্তে গ্লুকোজ কমে গেলেও নানান সমস্যা হতে পারে। যেমন-

  • গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে মৃত্যু হওয়াও বিচিত্র নয়।
  • হঠাৎ করে বুক ধড়ফড়।
  • হাত-পা কাঁপা ৷
  • ভয়ানক খিদে পাওয়া।
  • ঘাম হতে থাকা।
  • মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটা।
  • ঝিমিয়ে পড়া

এগুলো সবই রক্তে গ্লুকেজের মাত্রা কমে যাওয়ার উপসর্গ। এই উপসর্গগুলোর যে কোনো একটি বা কয়েকটি উপসর্গ একসঙ্গে হতে পারে। কোনো মানুষের ক্ষেত্রে যখন বারে বারে হাইপোগ্লাইসিমিয়া হয়, তখন একই উপসর্গ প্রতিবারই দেখা যায়। অর্থাৎ কারোর যদি হঠাৎ করে খুব ঘাম হওয়া কিংবা হাত-পা কাঁপা প্রথমবারের উপসর্গ হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীকালে হাইপোগ্লাইসিমিয়াতে একই উপসর্গ দেখা যাবে।

একটা কথা মনে রাখা দরকার হাইপোগ্লাইসিমিয়া ছাড়া অন্যান্য সমস্যাতেও একইরকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন পঞ্চাশোর্ধ্ব কোনো মহিলার দরদর করে ঘাম হতে পারে রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার জন্য, তেমনই মেনোপজের জন্য হট ফ্লাশও কারণ হতে পারে। সঠিকভাবে বোঝার জন্য কিছু একটা খেতে পারেন। খাওয়ার পর যদি উপসর্গ কমে যায় এবং একই সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও স্বাভাবিক দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার জন্যই এই উপসর্গ।

গ্লুকোজের কোন মাত্রাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে নানান মুনির নানা মত। কেন না বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কথাটাই আপেক্ষিক। তবে সাধারণ ভাবে ৫০ মিগ্ৰা প্ৰতি ডেসিলিটারের নীচে গ্লুকোজের মাত্রা হলে তাকে হাইপোগ্লাইসিমিয়া বলে।

প্রতিটি মানুষেরই সুস্থ জীবন যাপনের জন্য রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকা দরকার। যখনই গ্লুকোজের মাত্রা সেই নির্দিষ্ট সীমা ছাড়িয়ে বেড়ে যায় তাকে বলা হয় হাইপারগ্লাইসিমিয়া, যা ডায়াবেটিস মেলাইটাস রোগটিতে দেখা যায়। অন্যদিকে স্বাভাবিকতার নির্দিষ্ট সীমা থেকে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যখন কমে যায় তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। চলতি কথায় একে বলা হয় সুগার ফল। সুগার ফল করে যাওয়া একটি মারাত্মক অবস্থা। কারণ এতে খুব তাড়াতাড়ি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এটি সুগার বেড়ে যাওয়ার থেকেও ভয়ঙ্কর।

কেন এমন হয়?

আসলে দেহের স্বাভাবিক নিয়মে মানুষের ব্রেন তার রোজকার কাজকর্মের জন্য পুরোটাই গ্লুকোজের ওপর নির্ভরশীল। তাই রক্তে যদি গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ কমে যায়, ব্রেন তার খাদ্য পায় না। এর ফলেই বিপত্তি ঘটে। তাই শরীর সব সময় চেষ্টা করে গ্লুকোজের মাত্রা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ধরে রাখতে। রাত্রিবেলা আমরা সাত-আট ঘণ্টা ঘুমোই। আমরা সে সময় কিছু খাই না কিন্তু আমাদের শরীরে কিছু হরমোন যেমন গ্লুকাগন, এপিনেফ্রিন লিভার থেকে গ্লুকোজ তৈরি করে রক্তে পাঠায়। সেই গ্লুকোজ রক্তের মাধ্যমে ব্রেনে পৌঁছে তার খাদ্যের জোগান দেয়। এই সময় ইনসুলিনের ক্ষরণ কমে যায়। এর ফলে রক্ত থেকে গ্লুকোজ অন্যান্য কোষে না গিয়ে ব্রেনে পৌঁছয়। এর থেকে বোঝা যায় কেন সুস্থ মানুষের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না। অন্যদিকে শরীরের যে কোনো অসুস্থতা যা ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় বা গ্লুকাগন, এপিনেফ্রিন ইত্যাদি হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয় অথবা যেসব ক্ষেত্রে লিভারের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় সেই সব ক্ষেত্রেই মানুষের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কোন কোন 

অসুখে এই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে?

প্রধানত যে সব মানুষ ডায়াবেটিস মেলাইটাস অসুখে ভুগছেন এবং তার জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ খাচ্ছেন বা যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন তাদেরই হাইপোগ্লাসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া লিভার ফেলিওর, কিডনি ফেলিওর, কর্টিসোল হরমোনের অভাব, কিছু ওষুধের প্রভাব ও খালি পেটে মদ্যপান থেকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।

ইনসুলিনোমা একটি অত্যন্ত মারাত্মক অসুখ যেখানে প্যাংক্রিয়াসের একটি বিশেষ ধরনের টিউমার অতিমাত্রায় ইনসুলিন তৈরি করে। এই অত্যধিক ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ভীষণভাবে কমিয়ে দেয়। যে সব মানুষের ডায়াবেটিস নেই এবং আপাতদৃষ্টিতে যারা সুস্থ তাদের হাইপোগ্লাইসিমিয়া হলে সব সময় ইনসুলিনোমার সম্ভাবনা মাথায় রাখা উচিত।

যে কোনো মানুষের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কেন হচ্ছে সেটা নির্ধারণ করার আগে দরকার তার চিকিৎসা। সময়মতো ঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অথচ চিকিৎসা সময়মতো হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রোগী চাঙ্গা হয়ে ওঠেন।

যে রোগী সজাগ এবং বুঝতে পারেন তার সুগার কমে যাচ্ছে তখনই তার উচিত হাতের সামনে যে কোনো খাবার পেলে খেয়ে নেওয়া। তবে চিনি, লজেন্স, গ্লুকোজ হলে ভালো। কারণ এগুলো খেলে রক্তে তাড়াতাড়ি গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু রোগী অচেতন হয়ে পড়লে জোর করে মুখের মধ্যে খাবার দিলে ওই খাবার শ্বাসনালীতে গিয়ে বিপত্তি ঘটাতে পারে। তাই এরকম ক্ষেত্রে রোগীকে কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ইন্ট্রাভেনাস গ্লুকোজ দিতে হয়।

রোগীর জ্ঞান ফিরলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাবার খাওয়াতে হয়। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, যে সব ডায়াবেটিক রোগীর মুখে খাবার ওষুধ থেকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়, সে-সব ক্ষেত্রে হাইপোগ্লাইসেমিয়া কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং এমতাবস্থায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দু’-তিনদিন থাকা উচিত।

ডায়াবেটিস থাকলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়াটা আশ্চর্যের ব্যাপার নয়। বিশেষ করে সুগার নিয়ন্ত্রণ যখন ভালো তখন হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সম্ভাবনাও বেশি। কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের হঠাৎ করে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কিন্তু ধরে নিতে হবে শরীরে কোনো না কোনো গন্ডগোল রয়েছে। সুস্থ মানুষের কোনো কারণ ছাড়া হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি। যার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ইতিহাস আছে তার আশেপাশের মানুষ, বিশেষ করে বাড়ির লোকজনের এই রোগের উপসর্গ এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে অনেক সময় চিকিৎসকের কাছে পৌঁছনোর আগেই জীবন সংশয় হতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular