আগে বাইপাস সার্জারিতে পায়ের শিরা ব্যবহার করা হত। কিন্তু দেখা গেল সেই ভেন বা শিরা ৭-১০ বছরের বেশি কাজ করতে পারে না। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ধীরে ধীরে তা খারাপ হতে থাকে। তাই তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতি হিসাবে এল মিনি বাইপাস সার্জারি। হৃদরোগের চিকিৎসায় মিনি বাইপাস সার্জারি এখন বেশ প্রচলিত একটা পদ্ধতি। যদিও চিকিৎসাশাস্ত্রে একে বলা হয় মাল্টি ভেসেল মিনিম্যালি ইনভেসিভ ডিরেক্ট করোনারি আর্টারি বাইপাস বা মাল্টি ভেসেল MIDCAB। বাঁদিকের বুকের মাঝ বরাবর স্টারনাম নামে যে লম্বা হাড়ের সঙ্গে পাঁজরগুলো জুড়ে থাকে তার দুদিকে দুটো ইন্টারনাল ম্যামারি আর্টারি আছে। লেফট- ইন্টারনাল ম্যামারি আর্টারি (LIMA), আর রাইট ইন্টারনাল ম্যামারি আর্টারি (RIMA)। ৪-৫ ইঞ্চি ফুটো করে এই ধমনী দুটো ইংরেজি ওয়াই-এর মতো করে যুক্ত করা হয়। এই ধরনের অপারেশন করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এর ফলে সব জায়গায় রক্ত চলাচলের পরিমাণ বেড়ে যায়। যদিও এই পদ্ধতি ছোট আকারের হার্ট হলে বেশি কার্যকরী হয়। কিন্তু হার্টের আকার যদি তুলনায় বড় হয় তাহলে গুরুত্বপূর্ণ দুটো করোনারি আর্টারির আলাদাভাবে চিকিৎসা করা দরকার হয়। আর অন্যান্য ব্লকেজ দূর করতে বাইপাস সার্জারি করতে হয়। লিমা রিমা সার্জারির পর বেশিরভাগ রোগী ১৫-২৫ বছর পর্যন্ত খুব ভালো থাকেন। কোনও সমস্যা হয় না। আগে করোনারি আর্টারি- বাইপাস সার্জারিতে পায়ের দিকে শিরা নিয়ে বাইপাস গ্রাফট তৈরি করা হত। ১৯৯৬ সালের আগে পর্যন্ত এই পদ্ধতিই চালু ছিল। তখন রোগীর দেহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য হার্ট- লাভ মেশিনের সাহায্য নেওয়া হত। আর অপারেশন করা হত অনেকটা সময় হার্টের কাজ স্তব্ধ রেখে। এই পদ্ধতিতে রক্তপাত বেশি হত। এছাড়াও হার্ট ফেলিওর, কিডনি ফেলিওর, এমনকী সংক্রমণের চান্স বেড়ে যেত। ১৯৯৫ সাল থেকে বেলজিয়াম, ইতালি এবং ভারতে শুরু হয় বিটিং হার্ট বাইপাস সার্জারি। এক্ষেত্রে আর হার্ট-লাঙ মেশিন ব্যবহার করে হার্টের স্পন্দন বন্ধ রাখা হত না। তবে এই অপারেশনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এল ১৯৯৮ সালে। যখন থেকে মেকানিকাল স্টেবিলাইজারের ব্যবহার শুরু হল। এই ডিভাইসের সাহায্যে যে জায়গায় সমস্যা সেখানেই অপারেশন করা হয়। বাকি অংশের কাজ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া শ্বাসযন্ত্র এর ওপরে সার্জারির প্রভাব পড়ে না, হার্টের ওপরেও চাপ কম পড়ে। এখন হার্টের ৯৯% অপারেশনই করা হয় বিটিং হার্ট প্রযুক্তিতে।