Home পারম্পরিক ঔষধি ঘরোয়া প্রতিকার চোখের সমস্যার সমাধান | Eye Problems | Eye Diseases | Myopia |...

চোখের সমস্যার সমাধান | Eye Problems | Eye Diseases | Myopia | Hyperopia

মানুষের জীবনে চোখ সবথেকে মূল্যবান। সেই মূল্যবান সম্পদকে সুরক্ষিত এবং সুন্দর করে রাখা একান্ত প্রয়োজন। সে জন্য প্রয়োজন চোখ সম্বন্ধে কিছু জানা । 

চোখের বিভিন্ন অংশগুলো দু’ভাগে ভাগ করা যায়— রক্ষী অংশ ও অক্ষিগোলক ৷

  • রক্ষী অংশে রয়েছে—অক্ষিকোটর, চোখের পাতা, ভ্রূ, অক্ষিপক্ষ, কনজাং টাইভা, চোখের সাদা অংশ ও অশ্রুগ্রন্থি।
  • অক্ষিগোলকে রয়েছে—শ্বেতমণ্ডল, অচ্ছেদ পটল, কৃষ্ণমণ্ডল বা কোরোয়েড, কনীনিকা বা আইরিশ, অক্ষিপট বা রেটিনা, লেন্স ও অক্ষিকোটর-প্রকোষ্ঠ।

রেটিনার স্নায়ুকোষগুলো পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে অপটিক স্নায়ু গঠন করে ও গুরুমস্তিষ্কের দর্শনকেন্দ্রে যায়। অপটিক স্নায়ু যে বিন্দুতে মিলিত হয়, তাকে অন্ধবিন্দু বা ব্লাইন্ড স্পট বলে। এখানে কোনো আলোকসুবেদী কোষ না থাকায় বস্তুর প্রতিবিম্ব হয় না। তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার যে অঞ্চলে স্পষ্ট প্রতিবিম্ব হয়, তাকে পীতবিন্দু বলে।

চোখের মাধ্যমগুলো হল—করোনিকা, লেন্স, অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার। চোখের লেন্সটি আইরিশের পেছনে থাকে ও পাশ থেকে সাসপেনসারি লিগামেন্ট দিয়ে আটকে থাকে। চোখের ব্যাপারটি ঠিক একটা ক্যামেরার মতো ক্যামেরায় যেমন কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব ফিল্মের ওপর পড়ে, ঠিক সেইরকম আমাদের দেখা বস্তুর গা থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মি কর্নিয়া ভেদ করে পিউপিলের ভেতর দিয়ে লেন্সের মাধ্যমে রেটিনায় এসে উল্টেটা প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে। আলোকরশ্মির প্রভাবে রেটিনার রড ও কোন কোষ উদ্দীপ্ত হয়। আলোক অনুভূতি অপটিক নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কের সেরিব্রামের দৃষ্টিকেন্দ্রে পৌঁছয়। সেখানে পৌঁছনো মাত্র বস্তুকে আমরা সোজাভাবে দেখতে পাই। এই প্রক্রিয়ায় কোনো কারণে বিঘ্ন ঘটলেই দেখা দিতে পারে অন্ধত্ব ।

আদিমকালে মানুষ ছিল সম্পূর্ণ প্রকৃতি-নির্ভর। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে সেই পরিবেশ পাল্টে গেছে সম্পূর্ণভাবে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অপুষ্টি আর অশিক্ষার অন্ধকারে আজও তা নিমজ্জিত। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাই নানা সমস্যা নিয়েই পৃথিবীতে আসে। চোখের নানাবিধ সমস্যা শিশুদের অন্ধত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ছানি, অপটিক অ্যাট্রোপি এবং Glaucoma অন্যতম। যেসব সন্তানসম্ভবা মায়েদের ডায়াবেটিস বা হাইপারটেনশন থাকে, তাদের ঠিকমতো চিকিৎসাধীন থাকা প্রয়োজন নাহলে শিশুরা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নানা সমস্যা দেখা দেয়।

মায়োপিয়া | Nearsightedness | Myopia

এতে বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার সামনে পড়ে। রোগী সামনের জিনিস দেখতে পায়, কিন্তু দূরের জিনিস দেখতে পায় না। চশমা ব্যবহারে এ-রোগ সারে। আজকাল সাদা কাচের চশমা ছাড়াও নানারকমের রঙিন চশমা চলছে। রোদে কাচের রং পরিবর্তন হয়ে যাওয়া চশমার চাহিদাও আজ ব্যাপক। এছাড়াও আরও সুন্দর এবং আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বাজারে এসেছে রকমারি কনট্যাক্ট লেন্স। নানারকম রঙেরও পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মাইনাস পাওয়ারের চশমা ব্যবহৃত হয়

হাইপার মেট্রোপিয়া | Far-sightedness | Hypermetropia | Hyperopia

আসলে এটা রোগ নয়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিক অবস্থায় ছোট হওয়াতে বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার পেছনে পড়ে। তাই চশমা ব্যবহার করলে এই অসুবিধা দূর হয়ে যায়। এখানে ব্যবহার করা হয় প্লাস পাওয়ার ।

চোখের ছানি | Cataract

লেন্সের স্বচ্ছতা একেবারেই থাকে না। আঘাত, রোগ বা স্বাভাবিক কারণে এটা হতে পারে। শল্যচিকিৎসাই ছানির একমাত্র চিকিৎসা।

ছানির কারণ :

ছানি নানা কারণে হতে পারে। জন্মগত, যার নির্দিষ্ট কারণ অজানা, তবে মায়ের অপুষ্টি, মায়ের রোগ, প্ল্যাসেন্টাল রক্তক্ষরণ, কম অক্সিজেন সরবরাহ, ব্লু ডট ছানি, করোনারি ছানি, অ্যান্টেরিয়র ও পোস্টেরিয়র ছানি, করালি ফর্ম ছানি, ল্যামেলার ছানি প্রভৃতি। অ্যাকোয়ার্ড ছানির মধ্যে আছে কর্টিকাল, নিউক্লিয়ার, পোস্টেরিয়র কর্টিকাল, আঘাতজনিত, এন্ডোক্রিন, কমপ্লিকেটেড ইত্যাদি।

চিকিৎসা : 

ছানির চিকিৎসা অপারেশনই। ওষুধ দিয়ে ছানি কাটে না। বর্তমানে অপারেশন ছাড়া মাইক্রোসার্জারি বা আই. ও. এল. করা হচ্ছে ছানির চিকিৎসায়। এখানে চোখের ভেতর পুরনো ছানি বের করে কৃত্রিম লেন্স বসানো হয়। এখন মাইক্রোসার্জারিকে আরও উন্নত করার জন্য এসেছে ফেকো ইমালসিফিকেশন। এখানে সূচ ঢুকিয়ে আলট্রাসোনিক পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়। ছোট করে কাটা অল্প জায়গা দিয়ে ভাঁজ করা লেন্স চোখের ভেতর স্থাপন করা হয়। এতে কোনো সেলাই করা হয় না ।

পুরনো পদ্ধতিতে অপারেশন হলে সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি। কারণ মোটা কাচের চশমা পরতে হয়, চশমা ছাড়া ভালো দেখতে পাওয়া যায় না, বস্তুকে বড় দেখায়, পাশের জিনিসকে ভালো করে দেখা যায় না, এক চোখ ভালো কিন্তু অন্য চোখ অপারেশন হলে সমতা থাকে না। কিন্তু মাইক্রোসার্জারি হলে চশমার প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজনে অল্প পাওয়ার লাগতে পারে। এক চোখ ভালো, অন্য চোখে অপারেশন হলেও সমতা বজায় থাকে, হাসপাতাল বা নার্সিংহোম যেখানেই হোক এক-দু’দিনের ভেতর রোগী বাড়ি চলে যেতে পারে।

Glaucoma : সময় থাকতে সাবধান

যখন অক্ষিগোলকের চাপ সাধারণ চাপের থেকে বেড়ে যায়, তাকে Glaucoma বলে। নানান কারণেই এই চাপ বৃদ্ধি হয়ে থাকে, যেমন—

  • চোখের ভেতরের অ্যাকুয়াস হিউমার বাড়া-কমার ফলে।
  • রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য
  • লেন্স বা ভিট্রিয়াসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে।
  • বাইরের থেকে যখন কোনো চাপ চোখের ওপর পড়ে। 
  • কিছু ক্ষেত্রে বংশগত কারণ থাকে ।

Glaucoma কত রকমের হতে পারে : 

Glaucoma নানান রকমের হতে পারে । তার মধ্যে—

  • অ্যাবসলিউট Glaucoma : এখানে রোগী আলো উপলব্ধি করার ক্ষমতা “বুঝতে পারে না।
  • ইনফ্যানটাইল Glaucoma : এটা জন্ম থেকেই হয় ।
  • প্রাইমারি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল Glaucoma : মধ্য ও বয়স্ক লোকেরা আক্রান্ত হয়ে থাকে। সাধারণত ৪০ বছরের পর থেকে বেশি হয়। এই রোগের কারণ অজানা । যাদের মায়োপিয়া আছে, তারাই বেশি আক্রান্ত হন ৷
  • প্রাইমারি ক্লোজড অ্যাঙ্গেল Glaucoma : সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী লোকেদের হয়ে থাকে ।
  • সেকেন্ডারি Glaucoma : এই Glaucoma অন্য কোনো রোগের থেকে হয়। যেমন—অ্যাকিউট আইরিডো সাইক্লাইটিস, অ্যাকিউট স্কেলেরাইটিস, কর্নিয়াল আলসার, প্যান অপাথেলমাইটিস, লেন্স ইনডিউস Glaucoma, টিউমার ইত্যাদি। 

সাধারণত Glaucoma হলে :

  • চোখে ব্যথা হয়, অল্প মাথা ধরাও থাকতে পারে। দৃষ্টিশক্তি কমে যায় ৷
  • আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধে হয় ।
  • কর্নিয়া ঝাপসা হয় ৷

চিকিৎসা : 

আশাপ্রদ নয়, শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে চক্ষু বিশেষজ্ঞের মতামত সবসময় নেওয়া উচিত।

কনজাংটিভাইটিস | Conjunctivitis

আমরা সবাই খুব পরিচিত এই রোগের সঙ্গে। এটা চোখের একটা সাধারণ অসুখ। তবে সাধারণ অসুখ হলেও চিকিৎসকের মতামত নেওয়া উচিত। ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে চোখ খারাপ হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। কনজাংটিভাইটিস আসে বা হয় তিনভাবে :

  • একসোজিনাস : যখন বাইরের থেকে মাইক্রোআর্গানিজম বা কোনো কেমিক্যাল কনজাং-টাইভার মধ্যে প্রবেশ করে।
  • এনডোজিনাস : শরীরের কোনো অসুখের জন্যও হতে পারে।
  • চোখের চারপাশ থেকেও হতে পারে । যেমন চর্মরোগ, নেত্রনালী বা কোনো ইনফেকশন দ্বারা কনজাংটাইভা আক্রান্ত হয় ।

কত রকমের কনজাংটিভাইটিস : 

অনেক রকমের কনজাংটিভাইটিস আছে। তার মধ্যে—

  • অ্যাকিউট মিউকো-পুরুলেন্ট কনজাংটিভাইটিস : যে-কোনো বয়সে এই রোগ হতে পারে। হাম, জ্বর, নোংরা পরিবেশ বা বদ অভ্যাসের ফলে এই রোগ হতে পারে। চোখে অস্বস্তি, চোখ খচখচ করা, জল পড়া, লাল হওয়া, আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধা, চোখ জুড়ে যাওয়া এই রোগের লক্ষণ। এই রোগ প্রবল ছোঁয়াচে। যার হবে তার কাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো

যা করতে হবে :

অল্প উষ্ণ লবণজল দিয়ে দিনে তিন-চারবার চোখ ধুয়ে ফেলতে হবে ও চোখের পিচুটি পরিষ্কার করতে হবে।

  • কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিনে ছয় থেকে আট বার অথবা প্রয়োজনে তারও বেশিবার দিতে হবে—চোখের অবস্থা দেখে।
  • চোখ যাতে জুড়ে না যায়, তার জন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগাতে হবে।
  • যদি কর্নিয়ায় কিছু হয়, তার জন্য অ্যাট্রোপিন ব্যবহার করা যায় ৷
  • স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ একেবারেই চলবে না।
  • বেশি সমস্যা হলে চক্ষু-চিকিৎসকের মতামত নেওয়া উচিত।
  • ক্রনিক ক্যাটারাল কনজাংটিভাইটিস : অ্যাকিউট কনজাংটিভাইটিসের চিকিৎসা ঠিকমতো না করলে এই রোগের সৃষ্টি হয়।
  • মেমব্রেনাস কনজাংটিভাইটিস : এই রোগ সাধারণত বাচ্চাদের হয় ২ থেকে ৮ বছরের মধ্যে।
  • গনোরিয়াল কনজাংটিভাইটিস : অসংযত জীবনযাপন যারা করেন, তাদের এই রোগ হয়ে থাকে ।
  • অপথ্যালমিয়া নিওনেটোরাস : শিশুর জন্মগ্রহণের তিন সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে।
  • অ্যাঙ্গুলার কনজাংটিভাইটিস : বসন্তকাল ও গরমকালে এই রোগ বেশি হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের। সঙ্গে সর্দি-কাশির প্রকোপ থাকতে পারে।
  • ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস : বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস থেকে এই রোগের উৎপত্তি।
  • ফলিকুলার কনজাংটিভাইটিস : এই রোগ সংক্রামক। চোখে ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো হয়ে থাকে। কনজাংটিভাইটিস হাম, চিকেনপক্স, স্মলপক্স, ডেঙ্গ জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এমনকী টিকা নেওয়ার থেকেও হতে পারে ।
  • ফ্লিকটেনুলার কনজাংটিভাইটিস : অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বেশি মাত্রায় শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ, যক্ষ্মার প্রবণতা থেকে এই রোগ হতে পারে। হয় ৪—১৩ বছরের বাচ্ছাদের ।
  • ভারনাল কনজাংটিভাইটিস : ৬–২০ বছরের ছেলেমেয়েদের এই রোগ হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালে হয়, শীতকালে কমে যায় ।

ট্যারা : কোনও রোগ নয়

ট্যারা কোনো রোগ নয়। ট্যারা হওয়ার কারণ চোখের পেশির গণ্ডগোল। চোখে ৬টি মাসল বা পেশি আছে। এই ৬টা পেশি দ্বারা চক্ষুগোলক নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। ট্যারা অনেক কারণে হতে পারে।

  • লেটেড স্কুইন্ট : যখন অক্ষিগোলকের পেশিগুলোর সমতা থাকে না ।
  • অ্যাপারেন্ট স্কুইন্ট : এখানে অক্ষিগোলকের কোনো বিচ্যুতি থাকে না। কিছু কিছু কারণে কোনো টিস্যুর বা ভিস্যুয়াল অথবা অপটিক্যাল এক্সিসের পরিবর্তন হলে।
  • প্যারালাইটিক স্কুইন্ট : যখন পেশি অতিরিক্ত দুর্বল হয়, তখন এই রোগ হয়। তাছাড়া তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ নার্ভের দুর্বলতার জন্যও হয়ে থাকে।

চিকিৎসা : 

চক্ষু-বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া উচিত। বেশি বয়স হয়ে গেলে খুব ভালো ফল হয় না। কারণ পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায়। এই রোগের চিকিৎসা সাধারণত শল্যচিকিৎসা। অল্প ট্যারা হলে চশমা বা চোখের ব্যায়াম করা মেশিন দিয়ে ঠিক করা যায় ৷

আঞ্জনি | Style

আঞ্জনি চোখের ওপরের বা নীচের পাতায় হয়। লাল হয়ে ফুলে যায় ও ব্যথা থাকে। অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করলে উপশম মেলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে ৷

চোখ চুলকানো ও জল পড়া

এই দুটো সমস্যা খুব বেশি দেখা যায়। পরিবেশ দূষণ, নোংরা পরিবেশ অনেকাংশেই দায়ী। এ-রোগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত। চুলকানো ও জল পড়ার অনেক কারণ আছে। এবং কারণ দেখে ওষুধ ব্যবহার করাই ভালো ৷ কারণ চোখ নিয়ে তো আর হেলাফেলা চলে না।

কাজল ও সুর্মা

আমাদের দেশে কাজল ব্যবহার দেখা যায় শিশু ও মহিলাদের মধ্যে ৷ বেশি কাজল ও সুর্মা চোখের ভালোর থেকে খারাপ করে বেশি। চোখের ওপর ও নীচের পাতায় একটি করে ছিদ্র থাকে, যা দিয়ে জল এসে চোখকে ভিজিয়ে রাখে । বেশি কাজল ও সুর্মার ব্যবহারে সেই ছিদ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে ও রোগের উৎপত্তি ঘটায়। চোখের কাজল ও সুর্মা যা বাজারে পাওয়া যায়, তা নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য বা উপাদানে তৈরি হয়। অধিকাংশই পরীক্ষিত নয়। সুতরাং না ব্যবহার করাই শ্রেয়। তাছাড়া অনেকে চোখ ভালো রাখার জন্য গোলাপজল, হুকোর জল, গেড়ির জল ইত্যাদি দিয়ে থাকেন, যা চোখের পক্ষে ক্ষতিকর। সুতরাং এ সবের ব্যবহার ভালো নয়, খারাপই করে থাকে।

Eye Problems

রেটিনাল ডিটাচমেন্ট | Retinal Detachment

যখন রেটিনার পর্দা আঘাত বা রোগের জন্য ছিঁড়ে যায়, তখন এই রোগ হয় নানা কারণে এই রোগ হতে পারে। চক্ষুগোলকের বাইরে থেকে টিউমার বা অন্য কারণ চাপ দিয়ে পর্দাকে ঠেলে দিতে পারে এবং রেটিনা কোনো কারণে ভেতরে ঢুকে যেতে পারে বা ফুটো হয়ে ছিঁড়ে যেতে পারে। তখন এখানে দুটো স্তরের মধ্যে জল জমে। এটাই রেটিনাল ডিটাচমেন্টের অন্যতম কারণ। যাদের হাইমায়োপিয়া থাকে, তাদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা থাকে। শল্যচিকিৎসাই এর একমাত্র চিকিৎসা।

করণীয়

চোখ আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের অন্যতম। তাই চোখকে সুস্থ রাখার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাস্থ্যের দিকে যেমন নজর দিই, চোখের প্রতিও তেমন দৃষ্টি দিতে হবে। প্রতিদিন স্নান করার সময় চোখ ভালো করে জল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। দিনে অন্তত তিন-চারবার জল দিয়ে চোখ ধুয়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। এছাড়া প্রতিদিন চোখের ব্যায়াম করা ভালো । বর্তমান যুগে কালার টিভি, কম্পিউটার ও পরিবেশ দূষণের জন্য লোকের চোখের সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও বইয়ের ছোট ছোট অক্ষর, যার জন্যও চোখ খারাপ হচ্ছে। শৈশব থেকেই শিশুদের সুষম খাদ্য ও উপযুক্ত আলোয় পড়াশোনা করানো উচিত। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত ও মুখরোচক খাদ্য স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। চোখের পক্ষেও। চোখের কোনো সমস্যাই ফেলে রাখা ঠিক নয়। ছোটোখাটো যাই হোক না কেন তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। দেরিতে বিপদ হতে পারে ভয়ঙ্কর। আর চোখ গেল তো সব গেল । সুতরাং সর্বদা সতর্কতা ।

টিপ্‌স

  • সমস্যা হলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। 
  • কাছ থেকে একটানা টিভি নয়। 
  • মাঝেমাঝে বিশ্রাম দিন চোখকে। 
  • রাস্তাঘাটের তেল, মলম চোখে লাগাবেন না । 
  • যখন তখন এবং অপরিষ্কার আঙুল চোখে দেবেন না। 
  • চোখে সকাল-সন্ধ্যে নিয়ম করে জলের ঝাপটা দিন। 
  • ধূমপানেও হয় চোখের ক্ষতি। 
  • অপ্রয়োজনে উল্টোপাল্টা চশমা পরবেন না।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version