Home পারম্পরিক ঔষধি Generic Drug: জেনেরিক মেডিসিন লিখতে ডাক্তারদের অনীহা কেনো?

Generic Drug: জেনেরিক মেডিসিন লিখতে ডাক্তারদের অনীহা কেনো?

ওষুধ হল চিকিৎসা পরিষেবাতে এক গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। এই ওষুধপণ্যটি রোগীদের জন্য ডাক্তার নির্বাচন করে দেন। কারণ ওষুধ চেনা, রোগে ব্যবহার, কার্যকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ের শিক্ষামালা চিকিৎসকদেরই রয়েছে। তাছাড়া রোগীরা চিকিৎসকদের কাছে যান রোগ নিরাময় করার জন্য। ওষুধ কেনার জন্য নয়। রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওষুধ এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। যা রোগীদের হয়ে ডাক্তার নির্বাচন করে দেন। কারণ ওষুধ হাতিয়ারটি সম্পর্কে চিকিৎসকদের জ্ঞান আর শিক্ষামালা রয়েছে। পুঁজিবাদী চিকিৎসা পরিষেবার কর্মীবাহিনী নিজেদের মুনাফার স্বার্থে ওষুধ নামক হাতিয়ারের ব্যবহার নিয়ে জনগণকে কখনোই শিক্ষিত করে তোলে না। ব্র্যান্ড নামে ওষুধ লিখে রোগীদের ভাবনা ও প্রয়োগকে ওষুধ বিজ্ঞান থেকে দূরে রাখা হয় বা আড়াল করা হয়। রোগীরা শিখে গেলে মুনাফা অর্জন আশাতীত না হওয়ার আশঙ্কায়। রোগীরা ওষুধপণ্য বাজার থেকে কেনেন। কিন্তু নিজেদের পছন্দের দামে কিনতে পারেন না। ডাক্তারদের পছন্দ এতদিন রোগীরা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ওষুধের দাম ও ডাক্তারদের ওষুধ-পছন্দ ঘিরে অনাচার এক পরিবর্তন আনতে চলেছে।

ওষুধের জেনেরিক নাম শিখে নেওয়া সহজ 

বর্তমানে একই ওষুধ পণ্যের বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন কোড নাম, রাসায়নিক নাম, অব্যবসায়িক নাম, জেনেরিক নাম, বাণিজ্যিক নাম বা ব্র্যান্ড নাম ইত্যাদি।

কোড নাম : কোড নাম হচ্ছে কোম্পানি বা গবেষকদের দেওয়া নাম। কোম্পানির বিশেষ বিশেষ পদাধিকারী ছাড়া কেউ এ নামের আড়ালে কী রাসায়নিক পদার্থ আছে তা জানেন না। যেমন বায়ার কোম্পানি সিপ্রোফ্লক্সাসিন-এর কোড নাম দিয়েছিল Bay-0-9867। যদিও ওষুধ ব্যবহারে কোড নামের কোনো গুরুত্ব নেই।

রাসায়নিক নাম : রসায়নবিদরা এই নাম ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। রাসায়নিক নাম বড় ও জটিল হওয়ার জন্য প্রেসক্রিপশনে লেখা সমস্যাজনক। তবে বস্তুর রাসায়নিক ধর্ম বোঝার জন্য এ ধরনের নাম কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। যেমন সিপ্রোফ্লক্সাসিন-এর রাসায়নিক নাম 1 – cyclopropyol-6-Fluro-1, 4 dihydro-4- 0x07 piperazine.

ওষুধের অব্যবসায়িক নাম : রাসায়নিক নামের চেয়ে এই নাম ছোট। রাসায়নিক নাম থেকে শব্দ নির্বাচন করে এই নাম দেওয়া হয়। এই নাম নির্বাচন করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যেমন রাসায়নিক নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সহজ ও সংক্ষেপে উচ্চারণযোগ্য এবং রোগে ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত হতে হবে। অনেকে এই নামকে গুলিয়ে ফেলে জেনেরিক নাম বলেন। রাসায়নিক গোত্র দিয়ে ওষুধের জেনেরিক নাম ঠিক হয়।

ওষুধের বাণিজ্যিক নাম : এই নামকে ট্রেড নাম বা ব্র্যান্ড নাম বা কমার্শিয়াল নামেও ডাকা যেতে পারে। মূল রাসায়নিকটিকে বেশি পরিমাণে উৎপাদন করলে বুনিয়াদি ওষুধ (বাল্ক ড্রাগ) তৈরি হয়। এই বুনিয়াদি ওষুধ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি কিনে ভিন্ন ভিন্ন ফর্মুলেশন বানায়। ভিন্ন ভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ওষুধ ফর্মুলেশনগুলোর ভিন্ন নাম দেয়। ওই নামগুলোই বাণিজ্যিক নাম। অনেক সময় বুনিয়াদি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিরা নিজেরাই বাণিজ্যিক নামের ওষুধ ফর্মুলেশন তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। যেমন বায়ার কোম্পানির সিপ্রোফ্লক্সাসিনের নাম BAYCIP। সিপ্রোফ্লাক্সাসিনের অন্যান্য বাণিজ্যিক নাম হচ্ছে সিপ্রোমেড, বায়োসিপ, সিফান ইত্যাদি। একটি ওষুধের ভিন্ন ভিন্ন বাণিজ্যিক নাম হয়। কিন্তু কোর্ড নাম, রাসায়নিক নাম বা অব্যবসায়িক নাম সাধারণ ভাবে একটি বা দুটি হয়। 

যে সব রোগে (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি) কার্যত সারাজীবন ওষুধ ব্যবহার করতে হয় সেখানে চিকিৎসকরা একই ওষুধ ভিন্ন ভিন্ন বাণিজ্যিক নামে প্রেসক্রিপশন করে রোগীদের বোঝান ‘এবার ওষুধ পাল্টে দিলাম’, ভালো হয়ে যাবেন। জেনেরিক নামে ওষুধ লিখলে চিকিৎসকরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে বোঝাবেন ‘এ রোগে ভালো থাকবেন, ভালো হবে না।’ ওষুধ বিজ্ঞান পড়ানোর সময় ছাত্রদের জেনেরিক বা অব্যবসায়িক নামে ওষুধ চেনানো হয়। ডাক্তারি পাস করার পর মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদন নেওয়ার সময় ডাক্তারদের যে এথিক্স বা নীতিমালা দেওয়া হয় তাতে জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতে বলা থাকে । ‘Use of Generic names of drugs: Every physician should, as far as pos- sible, prescribe drugs with generic names and he/she shall ensure that there is a rational prescription and use. of drugs’। অথচ যখনই একজন চিকিৎসক প্রয়োগে যান তখন তিনি ওষুধ লেখার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড বা বাণিজ্যিক নামে ওষুধ লেখেন। একই ওষুধের ব্র্যান্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে ব্র্যান্ড লিখলে ডাক্তারের লাভ (বিভিন্ন ধরনের) তিনি সেটিই রোগীর জন্য নির্বাচন করে দেন। সচেতন বা অসচেতন ভাবে সাফাই দেন নির্বাচিত ব্র্যান্ডটি তার রোগীর পক্ষে শ্রেষ্ঠ। রোগীদের জন্য শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ড নির্বাচনে চিকিৎসকদের আত্মস্বার্থ অগ্রাধিকার পায়। ওষুধ কোম্পানি ও তার প্রচারকের স্বার্থে, সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে রোগীদের দাবিয়ে চিকিৎসকরা এক ধরনের ওষুধ বিক্রেতা হয়ে যান। ওষুধ বাজারে কার্যত রোগীদের ওষুধ নির্বাচনকারী হিসেবে ওষুধ কোম্পানির কথামতো এজেন্টে পরিণত হন কম বেশি সব চিকিৎসকই। চিকিৎসা বিক্রির চালিকা শক্তিতে ব্র্যান্ড বা বাণিজ্যিক নামে ওষুধ লেখা, গতি এনে দেয় বিভিন্ন কারণে।

ওষুধের দাম গোপন পুঁজিবাদের অনিবার্য শর্ত

ওষুধ বিজ্ঞান পড়ানোর সিলেবাসে আজ অবধি ওষুধের দাম নিয়ে ছাত্রদের কিছু শেখানো হয় না। আমার ছাব্বিশ বছরের ডাক্তারি শিক্ষকতা এবং আটত্রিশ বছরের ডাক্তারি জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আজও ওষুধের দাম সরকার ও ওষুধ কোম্পানি জনগণের কাছে গোপন করে রেখেছে। মুনাফার স্বার্থে ওষুধের প্রকৃত উৎপাদন খরচ ও লাভের পরিমাণ কখনোই জনগণকে জানানো হয় না।

ওষুধ কোম্পানি ও সরকারের নেতৃত্বে ওষুধের উৎপাদন খরচ ও লাভের পরিমাণ গোপন করা হয়। গোপন না করলে সীমাহীন মুনাফা করা যাবে না। আর এই মুনাফার সাথে জড়িত রয়েছে মানুষের শ্রমের অর্থ আত্মসাৎ করার সহজাত নিয়ম। তাই যুগ যুগ ধরে সিলেবাসে ওষুধের দাম ও লাভের প্রশ্ন অনুপস্থিত। কিন্তু ওষুধ বাজারের সংকট যখন বাড়ে, ক্রেতা কমে যায়, তখন ওষুধ কোম্পানিদের মধ্যে বাজার দখলের প্রতিযোগিতা চলে। এই সংকটকালে মানুষ জানতে পারেন ওষুধ বিক্রিতে হাজার হাজার শতাংশ লাভের বহর। জনগণের মধ্যে প্রশ্ন জাগে ওষুধের একই ফর্মুলেশনে ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের দাম কেন ভিন্ন ভিন্ন। ভাবখানা এমন যে, জনগণকে দাম অনুযায়ী ওষুধের ব্র্যান্ড নির্বাচনের অধিকার দেওয়ার প্রশ্নে দামের এই ফারাক। আসলে বিভিন্ন আয়ের ক্রেতা ধরার জন্য একই ওষুধের ভিন্ন ভিন্ন দাম রাখা হয়। বেশি দামি ওষুধ বেশি ভালো- এই সংস্কৃতি জনগণের মধ্যে চর্চা করিয়ে দামি ব্র্যান্ড বিক্রি করে ব্যাপক মুনাফা লোটে ওষুধ-ব্যবসায়ীরা। জেনেরিক মেডিসিন লিখলে এ সংস্কৃতি কিছুটা ধাক্কা খাবে।

জেনেরিক মেডিসিন লিখতে হবে এ বিতর্ক এল কেন

জনগণ ও রোগীরা এ প্রশ্ন তোলেননি। কারণ রোগীদের কাছে কষ্ট-যন্ত্রণায় আরাম আর রোগ মুক্তি প্রধান বিষয়। সরকারই প্রথম জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতে হবে এই প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। ওষুধ কোম্পানিরাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে কম দামে জেনেরিক মেডিসিন বাজারে বিক্রি করার ব্যবস্থা করে জনগণের মধ্যে ওষুধের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০০৫ সালে সরকারি- চিকিৎসকদের জেনেরিক মেডিসিন লিখতে হবে, এই মর্মে সার্কুলার দেয়। মেডিকেল কলেজ থেকে গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্র অবধি এ সার্কুলার কোথাও মানা হয়নি। সরকারের দিক থেকে মানানোর কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। ওষুধ বাজারে বেশির ভাগ কেন বলি, সবই বাণিজ্যিক নামে ওষুধ ছিল এবং আছে। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আবার সরকারি হাসপাতালে জেনেরিক মেডিসিন লেখার সার্কুলার দেয়। এবার চিকিৎসকদের ওপর আইনি খাঁড়া ঝোলানো হয়, জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতেই হবে। না লিখলে আইনি ও প্রশাসনিক শাস্তি। এই সময়ে চালু হল সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন হাসপাতালে ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’। ৫০ – ৭৭% ছাড়ের ওষুধ। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাধারণ ওষুধ-বাজারের মতোই ন্যায্য মূল্যের দোকানেও জেনেরিক নামের ওষুধ ফর্মুলেশন চালু হল না। কিন্তু ডাক্তারদের ওপর চাপ সৃষ্টি হল জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতেই হবে। কারণ সরকারি ডাক্তারদের জেনেরিক নামের প্রেসক্রিপশনগুলো বাইরের বাজার থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসবে ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলোতে। বর্তমান সরকারের জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখানোর জোর-জবরদস্তির পেছনে আসলে সংকটাপন্ন ওষুধ বাজারের প্রয়োজন মেটানো। ওষুধ বিজ্ঞানকে যুক্তিপূর্ণ ভাবে প্রয়োগ করার গণশিক্ষা মালা নয়। এছাড়া ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানগুলো ৫০–৭৭% ছাড় দিয়েও ব্যাপক লাভ করে। ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলো থেকে যে সমস্ত বাণিজ্যিক নামের ওষুধ চালু ছিল সেগুলোর নাম ওষুধ কোম্পানি ও সরকার বলতে লাগল ব্র্যান্ডেড জেনেরিক নামে। জনগণের কাছে ওষুধের একটি প্রতারণাপূর্ণ নাম ‘ব্র্যান্ডেড জেনেরিক মেডিসিন’ চালু হল। এখনো বাজারে কোনো জেনেরিক মেডিসিন চালু হয়নি। এ ধরনের প্রেক্ষাপটে জনগণের মধ্যে জেনেরিক মেডিসিন এবং এই নামে ওষুধ লিখতে হবে প্রশ্নগুলো এল। শুরু হল বিতর্ক।

জেনেরিক নামে কেন ওষুধ লেখা উচিত

ওষুধ বাজারে শুধু জেনেরিক নামে কোনো ওষুধ নেই। ব্র্যান্ড নাম ও জেনেরিক নাম, ওষুধের মোড়কে এক সাথে রয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক নাম বড় করে। অব্যবসায়িক নাম খুবই ছোট করে। ইচ্ছাকৃত ভাবেই সরকার ও ওষুধ কোম্পানি বাজারে বাণিজ্যিক নামে ওষুধ চালু রেখেছে। ফলে জনগণকে বাধ্য হয়ে বাণিজ্যিক বা ব্র্যান্ড নামের ওষুধ ফর্মুলেশন কিনতে হয়। যাতে জনগণ ভুলভাবে ব্র্যান্ড নামে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতেও চিকিৎসকরা জেনেরিক মেডিসিন বা অব্যবসায়িক নামে ওষুধ লিখলে জনগণ ও চিকিৎসকদের অনেক লাভ হবে।

  • রোগী, জনগণ ও চিকিৎসকরা ওষুধ ফর্মুলেশনের প্রকৃত রাসায়নিকটির নাম জানতে পারবেন। ফলে ওষুধের কাজ, পার্শ্বক্রিয়া, নিরাপত্তা, ওষুধের মাত্রা ও দাম নিয়ে সচেতনতা বাড়বে। জনগণ ওষুধ বিজ্ঞানের শিক্ষামালায় সজ্জিত হবেন। এ ঘটনা বিজ্ঞানের অগ্রগতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
  • রোগী, জনসাধারণ, ফার্মাসিস্ট, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক – কাউকেই একই ওষুধের ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ড নাম মনে রাখতে হবে না। দোকানে সব ব্র্যান্ড রাখার দরকারও নেই। খুচরো ওষুধ ব্যবসায় কম পুঁজি বিনিয়োগ করেও ভালো ভাবে দোকান চালানো যাবে।
  • চিকিৎসক ব্র্যান্ড নামে ওষুধ লিখলে রোগীরা ভাবতে পারেন ডাক্তারের সাথে ওষুধ কোম্পানির যোগসাজশ রয়েছে। বাস্তবে হয়তো ওই চিকিৎসকের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। জেনেরিক মেডিসিন লিখলে এ ধরনের সহজাত দ্বন্দ্ব কম হবে। রোগী-চিকিৎসক সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হবে।
  • জেনেরিক মেডিসিন বিভিন্ন ভৌগলিক অবস্থানে রোগীদের সংগ্রহ করতে অসুবিধে হবে না। ঘুরে ঘুরে ব্র্যান্ড খুঁজতে হবে না। চিকিৎসকরাও জানতে পারবেন ওষুধের রাসায়নিকটির পরিচয়।
  • কোনো রোগের সমাধান না হলে রোগীরা অন্য ডাক্তারের কাছে গেলে জেনেরিক মেডিসিন লিখলে পুনর্বার একই ওষুধ প্রয়োগের সমস্যায় পড়তে হবে না।
Generic Drug, জেনেরিক মেডিসিন

জেনেরিক মেডিসিনের বিরুদ্ধে যারা- ডাক্তাররা সবার আগে

চিকিৎসকদের সাথে বিভিন্ন আলোচনা সভাতে— ছোট বা বড়, দেখা গেছে প্রায় সব চিকিৎসকই একটি বিষয় বলেন, সরকারকে আগে বলুন, বাজারে জেনেরিক নামে ওষুধ চালু করতে। কেউ কেউ বলেন আমরা জেনেরিক নামে ওষুধ লিখলাম আর ফার্মাসিস্ট নিজের পছন্দমতো ব্র্যান্ড বিক্রি করে মুনাফা করল, তাতে রোগীদের অর্থের ক্ষতি হবে। তাছাড়া ফার্মাসিস্টের পছন্দমতো ব্র্যান্ডটিতে রোগীদের সমস্যা না মিটলে তখন দায়িত্ব কে নেবে? অনেক ওষুধের দোকানে প্রশিক্ষিত ওষুধ বিক্রেতা নেই, ফলে তারা জেনেরিক নামের ওষুধ দিতে পারবে না। তাহলে জরুরি রোগীদের ওষুধ না পাওয়ার সমস্যা কে সমাধান করবে?

কম-বেশি বিশ বছর এ রকম হাজারো অপযুক্তি ডাক্তারদের মুখে শুনে শুনে আমরা এটুকু বুঝেছি, জ্ঞানের ব্যক্তিমালিকানা হারিয়ে চিকিৎসকরা যত ‘প্রযুক্তি শ্রমিক’-এ পরিণত হচ্ছেন ততই চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যপণ্য বিক্রেতা হয়ে উঠছেন। আর বেশি বেশি বিভ্রান্তিতে ভুগছেন। চিকিৎসা বাজারের সংকট যত বাড়ছে তত জেনেরিক মেডিসিন এর দামের প্রশ্ন প্রকাশ্যে আসছে। ডাক্তাররা জ্ঞানের ব্যক্তি মালিকানা হারানোর সাথে সাথে ওষুধের ব্র্যান্ড নির্বাচন করার ক্ষমতা হারিয়ে আজ জেনেরিক নামে ওষুধ না লেখার বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন। 

তথ্যসূত্র : 

  • মেডিকেল এথিক্স-২০০২, মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। 
  • সরকারি সার্কুলার, মেমো নং H / TDE / 1160 / 1411/2005 dated 14/11/2005 
  • সরকারি সার্কুলার, মেমো নং DME / spcI/ corresp/616/2012/M/348(3) dated 14/02/2012

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version