Home পারম্পরিক ঔষধি Acupuncture: প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির রহস্যময় বিশ্ব

Acupuncture: প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির রহস্যময় বিশ্ব

আকুপাংচার চিকিৎসা শাস্ত্রে যে কোনো সন্ধির বাতের ব্যথাকে ‘পি সিনড্রোম‘ নামে অভিহিত হয়। এর সঙ্গে থাকে সন্নিহিত পেশিতে ব্যথা, সন্ধির সীমিত সঞ্চালন ও বিকৃতি। আধুনিক তথা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে নির্ধারিত রোগসমূহ যথা অস্টিওআর্থাইটিস, রিউম্যাটিক আর্থাইটিস, রিউম্যাটয়েড আর্থাইটিস, স্পন্ডিলাইটিস ইত্যাদি চীনা আকুপাংচার শাস্ত্রে পি সিনড্রোমর অন্তর্ভুক্ত। ‘পি’ এর অর্থ হল ‘ছি’ বা জীবনীশক্তি এবং রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটা এবং তার ফলে সৃষ্ট লক্ষণসমূহ হল পি সিনড্রোম। অভ্যন্তরীণ কারণ হল প্রবাহ ব্যাহত হয়ে ছি ও রক্তের ঘাটতি। এবং বাহ্যিক কারণ যেমন পরিবেশের ক্ষতিকারক বাতাস, ঠান্ডা, আর্দ্রতা, উষ্ণতা ইত্যাদি ও আঘাতজনিত অবস্থা। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণ একযোগে ছি ও রক্তের ঘাটতি ঘটিয়ে সন্নিহিত অঞ্চলের পেশি, টেন্ডন ও হাড়ের অপুষ্টি ঘটায় এবং ব্যথা সৃষ্টি করে। আপাতদৃষ্টিতে এর মূল ও সাধারণ লক্ষণ প্রদাহ অর্থাৎ ব্যথা, যন্ত্রণা, ফোলা ইত্যাদি। ব্যথা যন্ত্রণার রকমভেদ যেমন ক্ষতিকারক আর্দ্রতার কারণে পাথরের মতো ভারী ও ফোলা, ক্ষতিকারক বাতাসের প্রভাবে একাধিক সন্ধিতে ঘুরেফিরে ব্যথা, ক্ষতিকারক উষ্ণতার জন্য গরম ও জ্বালাজ্বালা, ক্ষতিকারক ঠান্ডার আক্রমণে গরম সেঁকে যন্ত্রণার উপশম ইত্যাদি। রোগের পৃথকীকরণ করে সেইমতো চিকিৎসা করা হয় । এখানে দুই ধরনের বাতের কথা বলব। 

স্পন্ডিলাইটিস

‘স্পন্ডাইল’ শব্দটি থেকে স্পন্ডিলাইটিস কথাটি এসেছে। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ভার্টিব্রা। যার বাংলা অর্থ হল কশেরুকা। এর প্রদাহকে বলা হয় স্পন্ডিলাইটিস। মানুষের শিরদাঁড়া ৩৩টি নির্দিষ্ট আকৃতির হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যেগুলি ভার্টিব্রা নামে পরিচিত। এই ভার্টিব্রাগুলি ঘাড় থেকে কোমর পর্যন্ত মালার আকারে পরপর সাজানো থাকে। এগুলির একটিতে বা একাধিকে প্রদাহ হতে পারে। অর্থাৎ স্পন্ডিলাইটিস ঘাড়ে, পিঠে বা কোমরে যেকোনো জায়গায় হতে পারে। তবে তা সাধারণত ঘাড়ে বা কোমরে বেশি হয়। যেগুলি হল সার্ভাইকাল স্পন্ডিলাইটিস ও লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস। এছাড়া আর একটি নাম শোনা যায় তা হল অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস। এতে দুটি ভার্টিব্রার মধ্যবর্তী কার্টিলেজ বা তরুণাস্থির চাকতি হাড়ে রূপান্তরিত হয় এবং শিরদাঁড়ার স্বাভাবিক নড়াচড়া নষ্ট হয়ে শক্ত হয়ে যায়।

যেকোনো স্পন্ডিলাইটিস হল একপ্রকার বাতের রোগ। এতে ব্যথা যন্ত্রণা হয়, আক্রান্ত স্থানের স্বাভাবিক নড়াচড়া ব্যাহত হয়ে আড়ষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় ঘাড়ের স্পন্ডিলাইটিসে হাত বরাবর যন্ত্রণা নামে এবং কোমরে হলে পা বরাবর কষ্ট নামে যা সায়াটিকা নামে পরিচিত। আজকাল স্পন্ডিলাইটিসের কষ্ট একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগের হার অনেক বেড়ে গিয়েছে। এখন আর এই বাতের ব্যথা কেবল বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, কম বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও তা খুবই শোনা যায়। বর্তমানে আধুনিক জীবনযাত্রার ধরন এবং সর্বক্ষেত্রে দূষণ এই রোগব্যাধির হার বাড়িয়ে তোলার অন্যতম কারণ।

সারভাইকাল স্পন্ডিলাইটিসের সাধারণ কারণগুলি হল একনাগাড়ে ঘাড় নীচু করে কাজ করা। যেমন যেকোনো টেবল ওয়ার্ক, সেলাই করা, গল্পের বই পড়া, কম্পিউটারে কাজ ইত্যাদি। অতিরিক্ত ভারী ওজন কাঁধে বহন করা, উঁচু বালিশে বা বালিশ ছাড়া শোওয়া, আঘাতজনিত অবস্থা ইত্যাদিও সারভাইকাল স্পন্ডিলাইটিসের কারণ। লাম্বার স্পন্ডিলাইটিসের ক্ষেত্রে কারণগুলি হল সামনে অতিরিক্ত ঝুঁকে কাজ করা বা ভারী জিনিস তোলা, দীর্ঘসময় একনাগাড়ে বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করা, ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে মাটিতে শোওয়া বা অতিরিক্ত নরম ও অসমান গদিতে শোওয়া, আঘাতজনিত কারণ, অসংযমী যৌনক্রিয়া, মেদবহুল ভারী চেহারা ইত্যাদি। অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসও সাধারণত আঘাতের ফলে অথবা উল্লিখিত কারণে হয়ে থাকে।

Acupuncture

এছাড়া স্পন্ডিলাইটিসের অন্যান্য কারণগুলি হল শিরদাঁড়ার গঠনগত ত্রুটি যেমন দুটি ভার্টিব্রার মধ্যবর্তী চাকতির স্থানচ্যুতি হয়ে স্নায়ুমূলে চাপ সৃষ্টি করা, মেরুদন্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয়ে যাওয়া, দুটি ভার্টিব্রার মধ্যবর্তী জায়গা কমে যাওয়া, ঘাড়ের হাড় বেড়ে সারভাইকাল রিব হওয়া, কোমর অঞ্চলের ভার্টিব্রা ও স্যাক্রাম হাড়ের একীভূত হওয়া। এছাড়াও ওই হাড়গুলির বা সন্নিহিত অঞ্চলের কোনো সংক্রমণজনিত রোগ বা টিউমার, কিডনির অসুখ, বংশগত কারণ ইত্যাদি থাকে রোগাক্রমণের পিছনে।

ব্যথার রোগীর ক্ষেত্রে অনেকে বেদনানাশক ওষুধ খেয়ে সাময়িক উপকার পান, কিন্তু পরবর্তীকালে ব্যথা বেড়ে যায়। দেখা গেছে কারো ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে উঠলে ব্যথা খুব বেশি থাকে, অন্য কারোর সাহায্য ছাড়া বাথরুমে পর্যন্ত যেতে পারেন না। অনেকের চেহারা স্থুলকায়। এসব নিয়ে যারা আকুপাংচার চিকিৎসা করাতে আসেন তাদের প্রথমেই বলা হয় কেবল আকুপাং চার নয়, দৈনন্দিন জীবনে বেশ কিছু অভ্যাস বদলানোর কথা। মানসিকভাবে যদি প্রস্তুত থাকেন তবেই চিকিৎসা শুরু করা যাবে। তা না হলে ব্যথা যন্ত্রণা সাময়িক কমবে। কোমরে ব্যথার কারণগুলি হল দীর্ঘদিন নরম বা অসমান গদিতে শোওয়া, কোনো কায়িক পরিশ্রম না করা, অতিরিক্ত ওজন, পায়খানা পরিষ্কার না হওয়া ইত্যাদি। এসব কারণগুলিকে দূর করতে হলে এককভাবে আকুপাংচার নয়, সমন্বিত উপায়ে এর সাথে যোগ, প্রাকৃতিক চিকিৎসা, প্রাকৃতিক খাদ্যাভ্যাস যুক্ত করতে হবে। বাড়ির জাঁকজমক পরিবেশে এসব শুরু করা প্রথমে সহজ নয়। ইন্ডোর প্রথম কোর্সে দশদিন ভর্তি থেকে দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যসম্মত কিছু অভ্যাস আয়ত্ত করে নিলে পরে বাড়িতে সেসব মেনে চলা অনেক সহজ হয়। এসব বোঝানোর পর রোগীর আগ্রহ দেখে ইন্ডোর থেকে চিকিৎসা শুরু করা হয়। আসলে মন থেকে সায় না দিলে জোর করে  চাপিয়ে দিয়ে এইসব চিকিৎসা করা যায় না।

ভোরবেলা পাতিলেবুর রস ও মধু সহ ইষদুষ্ণ এক গ্লাস জলপান শরীরে মেদ কমাতে সাহায্য করে। এরপর পায়খানা পরিষ্কারের জন্য এনেমা বা ডুশ দেওয়া, ব্যথা কমানোর জন্য হিপ বাথে বসানো এবং স্নানের পর প্রাণায়াম। এসব খালিপেটে চলার পর হালকা জলযোগ সারা হলে আকুপাংচার শুরু হয়। কোমরে, হাঁটুর পিছনে ও গোড়ালিতে সুঁচ লাগিয়ে কুড়ি মিনিট রাখা এবং আকুপাংচারের আনুষঙ্গিক হ্যামারিং ও কাপিং ইত্যাদি প্রয়োজন অনুযায়ী চালানো হয়। খাদ্যতালিকায় প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়া হয়। ব্যথা কিছুটা কম হলে তিনদিন পর থেকে ভোরবেলা ও সন্ধায় হাঁটা, খালি হাতে ব্যায়াম ও যোগাসন যুক্ত করা হয়। ব্যথা থাকায় কোমরের ব্যায়াম বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্থুলকায় শরীরে এতদিন কেবল ক্যালোরি সঞ্চিত হয়েছে, এবার কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার, উপবাস, হাঁটা, আসন ইত্যাদির মাধ্যমে তা খরচ করানো হয়। ছুটি হয়ে যাওয়ার সময় বলা হয় খাবার ও অন্যান্য সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে এবং বিছানা বদলিয়ে একটা পাতলা ও সমতল গদিতে শুতে। পরের কোর্সের জন্য দশদিন পরে আসতে বলা হয় ।

পরের দুটি কোর্সে দু’ সপ্তাহের ফাঁকে বা গ্যাপে একদিন ছাড়া দশদিন আউটডোরে ‘চিকিৎসা চলে। এগুলির শেষে রোগীকে বলা হয় প্রতিদিন দু’বেলা কোমরে হ্যামারিং করে নিতে কারোর সাহায্যে। এছাড়া বাকি সব কিছু আগের পরামর্শমতো চলতে হবে। একমাস পরে এলে যদি দেখা যায় উপযুক্ত ওজন কমেছে এবং কোনো কষ্ট নেই। তখন কিছু কোমরের ব্যায়াম দেখিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মাসে একবার করে ছ’ মাস আসতে হয় ওজন ঠিকমতো কমেছে কিনা দেখার জন্য।

নানা ধরনের উপসর্গ দূর করতে আকুপাং চার বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা নেয়। ব্যথার স্থান অনুযায়ী স্থানীয় বিন্দু ও তদনুযায়ী হাতে বা পায়ের দুরবর্তী বিন্দুতে স্টিমুলেশন বা উত্তেজনা দেওয়া হয়। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রেস, অনিদ্রা, স্থুলতা ইত্যাদি কারণে উদ্ভূত ব্যথার জন্য কিছু বিন্দু যুক্ত করা হয় যেগুলি সামগ্রিকভাবে মানবতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এর সাথে আনুষঙ্গিক পদ্ধতিসমূহ যেমন হ্যামারিং, মক্সিবাশ্চান, কাপিং, টি.এন.এস প্লেট, ইলেকট্রিক স্টিমুলেশন ইত্যাদি প্রয়োজনমতো ব্যবহৃত হয় । এই আনুষঙ্গিক পদ্ধতিগুলির মধ্যে হ্যামারিং ও কাপিং বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এগুলি প্রয়োজন হলে রোগীবন্ধু নিজেও বাড়িতে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এগুলির ব্যবহার সহজেই শিখে নেওয়া যায়। এসবের প্রয়োগ পদ্ধতিও খুব সহজ। দ্রুত যন্ত্রণার উপশম দিয়ে কষ্ট লাঘব করে এবং কোনো খরচও লাগে না। তাই রোগীদের এই পদ্ধতি দুটি শিখিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অল্প স্বল্প যন্ত্রণায় বা অসময়ে কষ্ট হলে সর্বদা চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না ।

কেবল এই এক বা একাধিক চিকিৎসা নয়, এর সাথে কিছু পরামর্শ দেওয়া বিশেষ জরুরি। যেগুলি রোগীর বাড়িতে মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজন। যেকোনো রোগে খাবার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা ভালো। ব্যথা কিছুটা কম হলে কয়েকদিন নপর থেকে ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় হাঁটা, খালি হাতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম ও যোগাসন অভ্যাস করা উচিত। সম্ভাব্য যে এক বা একাধিক কারণে স্পন্ডিলাইটিস হয়েছে সেসব যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা দরকার। যেমন বিছানাটি হবে একটা পাতলা ‘ও সমতল গদিযুক্ত, মাটিতে যতটা সম্ভব না শোওয়া। কারণ ঘরের মেঝে পাকা হলেও স্যাঁতসেঁতে ধরনের থাকলে কোমরের কষ্ট বেড়ে যাবে। বালিশটি এমন উচ্চতায় হবে যেটি ঘাড়ের স্বাভাবিক বক্রতাকে শোওয়ার সময় বজায় রাখতে সাহায্য করে ইত্যাদি। তবে পরামর্শ দেওয়ার সময় রোগীর অর্থনৈতিক অবস্থাটিও বিবেচনা করা দরকার। কারণ এটিও সমন্বয়ের মধ্যে পড়ে। তা না হলে এই পরামর্শ একমুখী হবে, পেশাগত কারণে বা আর্থিক অক্ষমতায় রোগী মেনে চলতে অপারগ হয়ে বারংবার আক্রান্ত হবেন। তাই নিরুপায় হলে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা আয়ত্ত করার পরামর্শ দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। তার ফলে রোগী দীর্ঘস্থায়ী উপশম লাভ করবেন। 

এই চিকিৎসার খরচ অত্যন্ত কম। সামান্য সুঁচ, তুলো, স্পিরিট, মক্সা ইত্যাদির মূল্য সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে। অতি সাধারণ মানুষও এই চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। তবে দীর্ঘকালীন যেকোনো রোগের উপশমের জন্য ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নেওয়া ও অনুষঙ্গিক নিয়মকানুন মেনে চলা বিশেষ প্রয়োজন। রোগীবন্ধু ও তাদের পরিবারের মানুষদের কাছে বিশেষ অনুরোধ যে, এই রোগ যতই কষ্টকর বা দীর্ঘকালীন হোক না কেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ওষুধবিহীন এই সমন্বিত আকুপাংচার চিকিৎসা সমস্ত ক্ষেত্রেই যথেষ্ট উৎসাহজনক ফল দিয়ে থাকে।

এখন আর এই বাতের ব্যথা কেবল বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, কমবয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও তা খুবই শোনা যায়। বর্তমানে আধুনিক জীবনযাত্রার ধরন এবং সর্বক্ষেত্রে দূষণ এই রোগব্যাধির হার বাড়িয়ে তোলার অন্যতম কারণ।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version