Home নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যা মায়ের আদরে সুগঠিত নবজাতকের মস্তিস্ক

মায়ের আদরে সুগঠিত নবজাতকের মস্তিস্ক

মায়ের শরীর ও মনের স্বাস্থ্য এবং আভ্যন্তরীণ কীটাণু সমাজের যে বিরাট ভূমিকা সন্তানের মস্তিষ্ক গঠনের ব্যাপারে সেই নিয়ে এই আলোচনা।

গর্ভাবস্থায় চাপ বা স্ট্রেস

বহু যুগ আগে থেকেই জানা আছে (এবং লোককথায় এই রকম প্রচলিত) যে একজন নারী যখন গর্ভবতী, যখন তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করছেন, তখন তার মানসিক চাপের মাত্রা সন্তানের ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের পক্ষে অন্তরায় হতে পারে।

যেসব অন্তঃসত্ত্বা অসম্ভব মানসিক চাপে ভুগছেন, তাদের গর্ভস্থ বাচ্চারা খুবই ধীরগতিতে বাড়তে থাকে সাধারণ, স্বাভাবিক, সুস্থ বাচ্চাদের তুলনায়। জন্মের সময় তাদের ওজনও কম হয়। আর তাদের ক্ষেত্রে খুব অল্পতেই দ্রুত সংক্রমণের শিকার হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। যাই হোক, অতি সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা এবং পরীক্ষা- নিরীক্ষার আগে ওই ধরনের বাচ্চাদের মস্তিষ্ক গঠন এবং স্বভাব-মেজাজ, আচার-ব্যবহার সম্বন্ধে বিশেষ কিছু তথ্য জানা ছিল না।

চাপের শিকার আন্ত্রিক জীবাণু

দু’ ধরনের প্রামাণ্য তথ্য, আমাদের আন্ত্রিক বা অন্ত্রে-আশ্রিত কীটাণু সঙ্গীদের ওপরে ওই ধরনের চাপ সংক্রান্ত – যা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে প্রথমটি সংগ্রহ করা হয়েছে বাঁদরের ওপরে পরীক্ষা থেকে। জানা গেছে যে মায়ের মানসিক চাপ অন্ত্রস্থ কীট সমাজের মধ্যে পরিবর্তন আনে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিনের নিউরোবায়োলজিস্ট ক্রীস কো গর্ভবতী রিসাস (Rhesus) জাতের বাঁদরদের চারপাশের পরিবেশে একটানা ছয় সপ্তাহ সোম থেকে শুক্রবার মাঝে মাঝেই দশ মিনিট ধরে প্রচন্ড জোর আওয়াজের সৃষ্টি করতেন। ওই আওয়াজটা এমন ছিল যে সেটার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে প্রচন্ড কর্মব্যক্ত একটা মহানগরীতে বাচ্চা প্রসব হওয়ার ঠিক অল্প কিছুদিন আগে থাকতে গর্ভধারিণীদের যানবাহনের আওয়াজ, রেলগাড়ি আর এরোপ্লেনের আওয়াজের সম্মুখীন হওয়ার সঙ্গে। আশ্চর্যের কথা, মানসিক চাপে আক্রান্ত বাদর মায়েদের নবজাত শিশুদের অন্ত্রে পাওয়া গেল শান্ত-সুখী-মানসিক চাপহীন পরিবেশে রাখা মায়েদের নবজাতকদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক বন্ধুসুলভ, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া আন্ত্রিক জীবাণু— ল্যাক্টোব্যাসিলি এবং বাইফিডো ব্যাক্টেরিয়া

ব্যাপারটার গভীর অনুসন্ধান

প্রথমে ব্যাপারটা একটু ধোঁয়াটে লেগেছিল যে কেমন করে মায়ের মানসিক চাপ নবজাতকের আন্ত্রিক কীটাণুর ওপরে প্রভাব ফেলতে পারে।

কারণ গর্ভস্থ শিশুর অস্ত্র থাকে একেবারে কীটাণু শূন্য সাদা কাগজের মতো। কিন্তু এখন, আমরা জানতে পারছি যে মানসিক চাপ গর্ভধারিণীর জরায়ুতে বসবাসকারী, কীটাণু সমাজে পরিবর্তন আনে – যার মুখ্য প্রভাব গিয়ে পড়ে নবজাতকের আন্ত্রিক কীটাণু সমাজের ওপরে।

যুক্তরাষ্ট্রের University of Pennsylvania-র মস্তিষ্ক বিজ্ঞানী ট্রেসি বেল এবং তাঁর দলের সদস্যরা গর্ভধারিণী ইঁদুর- মায়েদের ওপরে নানান রকমের অশান্তিকর পরিস্থিতি এনে হাজির করে চাপ সৃষ্টি করে তার ফলাফল লক্ষ করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ : শেয়ালের গায়ের বোঁটকা গন্ধে তাদের পরিবেশটাকে ভরে দিয়ে। ওই গবেষণাগারেই ইতিপূর্বে যে গবেষণা হয়েছিল তার থেকে জানা গিয়েছিল যে ওই ধরনের চাপের ফলে নবজাত পুরুষ শাবকদের ক্ষেত্রে মনের আবেগ ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে স্নায়ু সার্কিট গুলো রয়েছে, সেগুলোতে দুর্বলতা দেখা দেয় ৷

মায়ের কীটাণুসমাজে পরিবর্তনের ছায়া সন্তানের ওপর

মানসিক চাপে আক্রান্ত মায়েদের জরায়ুতে আন্ত্রিক কীটাণু-সমাজে যে পরিবর্তন আসে, তার মধ্যে প্রধান হল ল্যাক্টোব্যাসিলির সংখ্যা হ্রাস। অনেকদিন আগে থেকেই অবশ্য এ তথ্য জানা ছিল যে জরায়ুর ল্যাক্টোব্যাসিলির সংখ্যা কমে যাওয়ার দরুন জরায়ুর পরিবেশের অ্যাসিডিটিতে পরিবর্তন আসে, যার ফলে জরায়ুতে অতি সহজেই সংক্রমণ হতে পারে।

মায়ের কথা ছেড়ে দিন—প্রশ্নটা হল সন্তানকে নিয়ে। মায়ের জরায়ুস্থ কীটাণু সংখ্যা হ্রাস হলে সন্তানের আবেগপ্রবণতা, স্বভাব- মেজাজ ইত্যাদি সংক্রান্ত মস্তিষ্ক গঠনে সমস্যার আবির্ভাব হবে কেন? কারণটা কিছু জটিল নয়। মায়ের জরায়ুতে আশ্রিত কীটাণুদের নিয়েই সন্তানের আন্ত্রিক কীটাণু বসতির শুরু। ইঁদুর এবং বাঁদর- এই দুই ধরনের প্রাণীদের ওপরে পরীক্ষা করেই ওই একই তথ্য পাওয়া গেছে।

এই ধরনের মানসিক চাপের ফল (স্ট্রেস এফেক্ট) যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। কারণ এই ঘটনা ঘটে এমন একটা সময়ে যখন শিশুটির আন্ত্রিক কীটাণু সমাজ এবং মগজের স্নায়ু সার্কিট- দুটোরই দীর্ঘ জীবনব্যাপী স্থাপত্যের গোড়াপত্তন একই সঙ্গে সবে হতে শুরু হয়েছে।

ইঁদুর মায়েদের মানসিক চাপ যে শুধু তাদের শাবকদের আন্ত্রিক কীটাণুদের ওপরেই কুপ্রভাব বিস্তার করে তা নয়, তাদের নিজেদের মগজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেই রকমই দেখা গেল। University of Pennsylvania- ডঃ ট্রেসি বেল মুষিক শাবকদের কীটাণুরা যে-রসায়ন সৃষ্টি করে, তার মিশ্রণ নিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন যে, যে-রসায়ন ওই প্রাণীদের শক্তি বা এনার্জির জোগান দেয়, সেটার ধর্ম বা প্রপার্টির মধ্যে পরিবর্তন আসে। নবজাতকের মগজের ওই শক্তি প্রদানকারী রসায়নের চাহিদা অসম্ভব বেশি রকমের— সেটার জোগানের অভাব আর ভাব সঙ্গে কিছু বিশেষ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডের অভাব— দুটোই মস্তিষ্কের সুস্থ-স্বাভাবিক গঠনের রাস্তায় প্রাচীর রচনা করে তোলে।

বিজ্ঞানীদের অতি আধুনিক যন্ত্রপ্রযুক্তি সম্পন্ন গবেষণাগারে লব্ধ এই ধরনের ফলাফল যেসব গর্ভবতী গর্ভধারণের পর্যায়ের মধ্যে রয়েছেন বা সদ্যোজাত শিশুর মা হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কতটা প্রযোজ্য? পরিণত বয়সে উদয় হওয়া অনেক রকমেরই মাথার এবং মনের অসুখের পিছনে কিন্তু রয়েছে গর্ভাবস্থায় গর্ভধারিণীর মানসিক উদ্বেগ-আশঙ্কার প্রবণতা (অ্যাংজাইটি), মানসিক অবসাদ (ডিপ্রেশন), বিভক্ত ব্যক্তিত্ব (স্কিজোফ্রেনিয়া), অটিজম এবং খুব সম্ভবত আই.বি.এস (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম)।

সুস্থ স্বাভাবিক মস্তিষ্ক গঠনের পক্ষে প্রধান অন্তরায় হল গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এবং মগজের সঙ্গে আন্ত্রিক স্নায়ু ব্যবস্থার যে সম্পর্ক, “সেটা দুই রকম ভাবে কুপ্রভাবিত হতে পারে। একটা হল মানসিক চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করার যে স্বাভাবিক পন্থা (ন্যাচারাল স্ট্রেস রেসপন্স সিস্টেম), তার সঙ্গে মগজ আর অন্ত্রের যে কক্ষপথ (brain-gut axis), সেটার মধ্যে জিনগতভাবে পরিবর্তন (epigenetic modification)। আর একটা হল অন্ত্রে বসবাসকারী কীটাণুদের মধ্যে মানসিক চাপের প্রভাবে পরিবর্তন এবং তারা যে রসায়ন উৎপাদন করে যেটা মগজের গঠনের জন্য শক্তির জোগান দেয়, সেটাতে পরিবর্তন। এটার অর্থ হল যে, যে ধরনের মাথা এবং মনের অসুখের একটু আগে এখানে উল্লেখ করা হল, সেগুলোর থেকে মুক্তি পেতে হলে একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে রক্ষা-কবচের ব্যবস্থা নিতে হবে। 

585

নবজাতকের ক্ষেত্রে কীটাণু সমাজের গঠন

 মানব শিশুরা মাতৃগর্ভে সুরক্ষিত, সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠে। তাদের কীটাণুদের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় যখন জরায়ুপথে তাদের মাতৃজঠরের বাইরে বার করে আনা হয়, সেই- সময় জরায়ুতে বসবাসকারী কীটাণুদের সংস্পর্শে এসে। বহু দশক ধরে চিকিৎসক সমাজে এইরকমের ধারণাই প্রচলিত। কিন্তু এখন সে ধারণা পাল্টানোর সময় এসেছে। যেসব গর্ভধারিণী মানসিক চাপ মুক্ত, তাদের ক্ষেত্রেও মায়ের আন্ত্রিক কীটাণু– যেগুলোর অধিকাংশই মিত্রপক্ষের, তারা নাড়ির রক্তের মধ্যে গর্ভের মধ্যেকার এমনিওটিক ফ্লুইড, প্লাসেন্টা ইত্যাদির মধ্যে এসে হাজির হয় নতুন প্রাণের শরীরে প্রবেশ করার উদ্দেশ্যে- তাকে জীবনের পথে সুস্থতার সঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। 

প্রসবের সময় যত এগিয়ে আসে, প্রসূতি মায়ের যোনিপথের কীটবসতিতে ততো জেগে ওঠে পাল্টানোর পালা। কীটগুলোর বৈচিত্র কমতে থাকে এবং ক্ষুদ্রান্তে সাধারণতঃ দেখা পাওয়া যায় এরকম একধরণের লাকটোব্যাসিলিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রসবের সময় নবজাতকটি অবশ্যই তার মায়ের যোনিপথের যেসব কীটানুকূলের মুখোমুখি হয়, তাদের সংস্পর্শে আসে, তাদের মধ্যে এই লাকটোব্যাসিলিও উপস্থিত রয়েছে শিশুটির পেটের ভিতরকার আন্ত্রিক অঞ্চলে বসতি বিস্তার করার উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে। 

ঠিক এইভাবে আপনার মায়ের জরায়ুস্থ কীটকুল থেকে আন্ত্রিক কীটকুলের সূত্রপাত হয় আপনার জন্মের সময়। তারাই এখন পর্যন্ত আপনার অভ্যন্তরে থেকে আপনার জীবনধারাকে পরিচালনা করে আসছে। মায়ের দান এই কীটকুল থেকে নবজাত শিশুরা তাদের জীবনপ্রবাহ পরিচালনার উপযোগী মেটাবলিক মেশিনারিও পাচ্ছে – যে মেশিনারির সাহায্যে সে মায়ের বুকের দুধের মধ্যেকার চিনি এবং বিশেষ ধরণের শর্করা অনায়াসে হজম করে নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করছে। 

সিজারিয়ান সেকশান প্রসবের প্রভাব 

যেহেতু মায়ের জরায়ু ও যোনিপথের কীটাণুদের দ্বারাই নবজাতকের আন্ত্রিক কীটজগতের শুভ উদ্বোধন হয়, সেজন্য বিজ্ঞানীরা এখন দেখা ও জানার চেষ্টা করছেন যে সিজারিয়ান সেকশন পদ্ধতিতে প্রসব করানো হলে নবজাতকের মগজের স্বাস্থ্য ভবিষ্যতে কীভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা। অত্যন্ত মজার ব্যাপার এই যে-ব্রাজিল এবং ইতালির মতো কোনও কোনও দেশে C-section পদ্ধতিতে প্রসূত নবজাতকদের সংখ্যা স্বাভাবিক প্রসবে জাত শিশুদের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গেলেও দীর্ঘ সময়ব্যাপী এমন কোনও গবেষণা ওইসব দেশে এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি যার থেকে জানা সম্ভব হবে স্বাভাবিক প্রসব পদ্ধতির মাধ্যমে পাওয়া মায়ের যোনিপথের কীটকুল না থাকার জন্য ওই সিজারিয়ান শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে যা থেকে ভবিষ্যতে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা এখন পর্যন্ত যা জানি সেটা হল যে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসূত বাচ্চাদের অন্ত্র-প্রদেশে মায়ের যোনিনালীর কীটাণুরা বাসা বাঁধে না। তাদের ক্ষেত্রে কীটাণুদের আমদানি হয় মায়ের শরীরের চামড়া, দাই, নার্স এবং ডাক্তারদের শরীর — বিশেষ করে হাত এবং হাতের আঙুলের থেকে। এছাড়া ওই ক্ষেত্রে আন্ত্রিক কীটাণুরা আসে হাসপাতালে রাখা অন্যান্য নবজাতকদের কাছ থেকে। তবে এটা সত্যি যে জরুরি মিত্র কীটাণু বাইফিডো ব্যাক্টেরিয়াদের সিজারিয়ান শিশুদের অন্ত্রে বসতি গড়ে তুলতে বেশি সময় লাগে স্বাভাবিকভাবে প্রসুত শিশুদের চাইতে। আমরা জানি যে ভয়ংকর আন্ত্রিক কীটাণু ক্লসট্রিডিয়াম ডিফিকুলি (Clostridium difficuli), অন্ত্রের মধ্যে চটপট সংখ্যায় বেড়ে যেতে পারে এবং সেটা যদি ঘটে তাহলে C- section-এর শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষতি করতে পারে মিত্র কীটাণু বাইফিডো ব্যাক্টেরিয়ারা এসে হাজির হয়ে পাকাপাকি ভাবে গেঁথে বসতে দেরি হবার জন্য। এটা একটা কারণ C-section-এ জাত শিশুদের বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেবার পেছনে। বিজ্ঞানীরা এটাও আঁচ করেছেন যে C-section-এর বাচ্চারা মস্তিষ্ক এবং অন্ত্রের যোগাযোগ ব্যবস্থার রূপ বদলানোর ব্যাপারে বেশি পলকা এবং অটিজমের মতো মারাত্মক মাথা ও মনের অসুখের শিকার হয়ে যাওয়াটা তাদের ক্ষেত্রে কিছু অসম্ভব নয়। এই ধরনের ধোঁয়াটে রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য অনেক রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখন উন্নত দেশগুলোতে চলছে। একটা গবেষণা এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। কচি বয়সে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বেশ বেশি ডোজে অল্পদিন বা একবারে অল্প ডোজে বেশ লম্বা কিছুদিন ধরে খেয়ে যাওয়ার দরুন পরবর্তীকালে নানান সমস্যার উদ্ভাবন হওয়াটা মোটেই আশ্চর্য নয়।

জন্মের পর স্নেহ ভালোবাসার প্রয়োজন জন্মের পর বাচ্চাকে প্রচন্ড স্নেহ-ভালোবাসার সঙ্গে মায়ের নিজের বুকের দুধ খাওয়ানো, তাকে জড়িয়ে ধরে চুমা খেয়ে আদর করে চটকানো উচিত— যাতে বাচ্চার মস্তিষ্কের গঠন সুসম্পন্ন হয়। এর পিছনে রয়েছে বাচ্চাটির আন্ত্রিক মিত্র কীটাণুদের সহযোগিতা। বাচ্চার প্রতি মায়ের এই ধরনের ব্যবহারের ব্যতিক্রম হলে এবং সেই ব্যতিক্রমী ব্যবহারই চলতে থাকলে, বাচ্চাটির জিনের মধ্যে পরিবর্তন আসার আশু সম্ভাবনা। যার ফলে বাচ্চার মস্তিষ্ক বা মনের অসুস্থতা কালক্রমে দেখা দেওয়াটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। এবং ওই এপিজেনেটিক চেঞ্জের কুফল বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে চলতে থাকবে। চিকিৎসাশাস্ত্রের সাধ্য নেই সেই নিম্নগতিকে রাসায়নিক বা যান্ত্রিক উপায়ে রুখে দেওয়া।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version