Home মহিলাদের স্বাস্থ্য গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ কেন হয়? (Abortion or Miscarriage in Bengali)

গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ কেন হয়? (Abortion or Miscarriage in Bengali)

একটি ছোট্ট শিশুকন্যা তার খেলার জগতে নিজেকে মায়ের ভূমিকায় রেখে তার পুতুলের সংসার সাজিয়ে তোলে। সেই শিশুকন্যা বড় হয়ে যখন প্রকৃতই সংসার জীবনে প্রবেশ করে, তখন মাতৃত্বলাভের আকাঙ্ক্ষায় তার মন আকুল হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় গর্ভসঞ্চার হওয়া সত্ত্বেও বারংবার গর্ভপাত হয়ে যদি তার স্বপ্নটি অধরাই থেকে যায়, তবে তার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়াই স্বাভাবিক।

গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ

গর্ভসঞ্চার থেকে ২৬ সপ্তাহের মধ্যে সন্তান নষ্ট বা গর্ভপাত হয়ে গেলে তাকে মিসক্যারেজ বলে। গর্ভকালকে ১৩ সপ্তাহ করে তিনটে ভাগে ভাগ করা হয়। এই প্রথম ১৩ সপ্তাহে বা ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে সন্তান নষ্ট হয়ে’ গেলে তাকে বলে আর্লি মিসক্যারেজ।

পরবর্তী ১৩ সপ্তাহ অর্থাৎ ১৩ সপ্তাহ থেকে ২৬ সপ্তাহ, এই দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে সন্তান নষ্ট হয়ে গেলে তাকে বলে লেট মিসক্যারেজ। ২২ সপ্তাহের আগে বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে ডাক্তারবাবুরা কোনো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন না। কারণ সেই সময় বাচ্চার হার্ট, ফুসফুস কিছুই তৈরি হয় না। ফলে বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভবই নয়।

২৪ সপ্তাহ হলে ডাক্তারবাবুকে ডাকা হয়। আর ২৬ সপ্তাহ হলে অনেক সময় বাচ্চার ওজন যদি ১ কেজির কাছাকাছি হয় তবে বাচ্চার বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি । 

বাচ্চার হার্টবিট 

৫ সপ্তাহে জরায়ুতে স্যাক তৈরি হয়। ৬ সপ্তাহে স্যাকের মধ্যে ডটের মতো ফিটাল পোল তৈরি হয় ও ৭ সপ্তাহে ফিটাল পোলে একটি হার্ট সাউন্ড শোনা যায়। তাই ৭ সপ্তাহে মোটামুটি বোঝা যায় গর্ভটা লাইভ প্রেগনেন্সি, না ত এনএমব্রায়োনিক প্রেগনেন্সি। যেখানে ফিটাল পোল আসেই না, শুধুই স্যাক হয়ে রয়ে গেছে। মিসক্যারেজ বা গর্ভপাতের ধরন ৭ সপ্তাহ থেকে ১২-১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত ফিটাল পোল এল না, হার্টবিট এল না, শুধুই স্যাক হয়ে রয়ে গেছে— এমন যদি হয় তবে তা কিন্তু এক ধরনের মিসক্যারেজ।

আবার কখনো দেখা যায় হার্টবিট, ফুসফুসের আওয়াজ সবই আছে কিন্তু মায়ের হঠাৎ করে ব্যথা ও ব্লিডিং শুরু হয়ে মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। একে বলে স্পনটেনিয়াস মিসক্যারেজ। এই মিসক্যারেজ তিন ধরনের হয়। এক ধরনের মিসক্যারেজ— ব্লাডকর্ড অর্থাৎ বাচ্চাটা পুরোটাই বেরিয়ে আসে। একে বলে কমপ্লিট মিসক্যারেজ। এতে পুরো প্রেগনেন্সিটা নষ্ট হয়ে যায়। আরেক ক্ষেত্রে কিছুটা ব্লাড কর্ড বেরোল, আর কিছুটা জরায়ুর ভেতর থেকে যেতে পারে। তখন তা পরিষ্কার করে দিতে হয়। একে বলে ইনকমপ্লিট মিসক্যারেজ।

অনেক ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তান, যেখানে গর্ভাসঞ্চার হয় সেখানে থেকে সরে জরায়ুর মুখে চলে আসে। যা আর সঠিক জায়গায় সরিয়ে দেওয়া যায় না। ফলে ধরেই নেওয়া যায় যে তার মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে সাপোর্টিভ চিকিৎসা দিয়ে কোনো লাভ হয় না। তাই একে বলে ইনএভিটেবল মিসক্যারেজ। সেক্ষেত্রে ওয়াশ করে দেওয়াই ভালো। না হলে ব্যথা ও ব্লিডিং হবে।

আর এক ধরনের মিসক্যারেজ হয় যাকে বলে থ্রেটেন্ড মিসক্যারেজ। এটা মিসক্যারেজের আভাস দেয়। কারো ক্ষেত্রে সামান্য ব্যথা, কারো ক্ষেত্রে হয় সামান্য হোয়াইট ডিসচার্জ, কারো বা ম্পটিং ইত্যাদি। সময়মতো ডাক্তারের কাছে এলে চিকিৎসা করে নর্মাল প্রেগনেন্সিও হতে পারে। আবার এর থেকে কমপ্লিট, ইনকমপ্লিট বা ইনএভিটেবল মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে। 

গর্ভপাতের কারণ

  • গর্ভপাত যদি প্রথম ট্রাইমেস্টারে হয় তবে তার প্রথম ও প্রধান কারণ হল ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতা। এর ফলে সঠিক প্রাণই তৈরি হতে পারে না। আর প্রকৃতিই সেই অস্বাভাবিক ভ্রূণগুলোকে এগোতে দেয় না। এক্ষেত্রে স্যাকটাই তৈরি হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে স্যাকটা বাড়তে থাকে কিন্তু কোনো ব্যথা বা ব্লিডিং কিছু হয় না। নিঃশব্দে গর্ভপাত হয়ে যায়। যেহেতু এই ধরনের সমস্যায় বাইরে থেকে কিছু বোঝা যায় না, তাই মাঝে মাঝে আলট্রাসাউন্ট করে দেখতে হয়। যদি দেখা যায় ৬ সপ্তাহে যে অবস্থা ছিল, ১২ সপ্তাহেও সেই একই অবস্থা, তবে বলেই দেওয়া যায় যে, মহিলাটির মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে হরমোন লেভেল (বিটা এইচ.সি.জি) কিন্তু ঠিক থাকে। তাই গর্ভবতী মহিলাটি মানতেই চান না যে তার মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে তাকে আলট্রাসাউন্ড করে দেখানো হয় যে একটা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানেও তার গর্ভকাল এগোচ্ছে না। ফলে তার মিসক্যারেজ হয়েই গেছে। সে অকারণে এতদিন গর্ভকাল টেনে নিয়ে চলেছে। আবার এমনও হয় যে ১২ সপ্তাহে বাচ্চার হার্টবিট পাওয়া গেল কিন্তু ২৪ সপ্তাহে দেখা গেল বাচ্চার হার্টবিট শোনা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রেও বলে দেওয়া যায় যে মিসক্যারেজ হয়ে গেছে।
  • এছাড়া মিসক্যারেজের আরেকটি অন্যতম কারণ হল পলিসিস্টিক ওভারি। প্রথম ট্রাইমেস্টারে মিসক্যারেজের ৫০ শতাংশই ঘটে পলিসিস্টিক ওভারির কারণে।
  • আর একটি কারণ হল সংক্রমণ। প্রথম টাইমেস্টারে ‘টর্চ’ সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণগুলোকে একসাথে টর্চ (TORCH) বলে অভিহিত করা হয়। যেমন ‘TO’ অর্থাৎ টক্সোপ্লাজমা, ‘R’ রুবেলা, ‘C’ বলতে বোঝায় সাইটোমেগালো ভাইরাস এবং ‘H’দিয়ে বোঝায় হারপিসকে। সংক্রমণ খুব নিঃশব্দে ঘটে যায়। যেকোনো একটির সংক্রমণ ঘটলেই গর্ভস্থ বাচ্চাকে আর বাঁচানো যায় না। মিসক্যারেজ হয়ে যায়।
  • প্রথম ট্রাইমেস্টারে মিসক্যারেজের চতুর্থ কারণ হল অ্যান্টিবডি সংক্রান্ত। অ্যান্টি- ফলপোলিপিড অ্যান্ডিবডি বা অ্যাপলার জন্য যে মিসক্যারেজ হয় তা কিন্তু রেকারেন্ট মিসক্যারেজ।
  • দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার বা মিড ট্রাইমেস্টারে মিসক্যারেজের প্রধান কারণ কিন্তু সংক্রমণ। তবে এই সংক্রমণ কিন্তু টর্চ নয়। একে বলে ব্যাক্টেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস। গর্ভধারণকালে কারো কারো ভ্যাজাইনার ভেতরে সংক্রমণ হতে দেখা যায়। এই সংক্রমণের ফলে সারভাইকাল ইনকম্পিটেন্স দেখা যায়। অর্থাৎ সারভিক্সটা ঝুলে পড়ে। এটি প্রথম ট্রাইমেস্টারে না দেখা গেলেও ১৫-১৬ সপ্তাহে অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এর ফলে ব্যথাহীন মিসক্যারেজ হয়ে যায়। হঠাৎ করে কোনো পাইপ খুলে গেলে যেমন হয়, এক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনই ঘটনা ঘটে।

গর্ভসঞ্চারের আগে গর্ভপাত সম্পর্কে ধারণা বেশ কিছু ক্ষেত্রে কোনো মহিলার গর্ভপাত হতে পারে কি না ডাক্তারবাবুর পক্ষে তা কিন্তু বোঝা সম্ভব। পলিসিস্টিক ওভারির ক্ষেত্রে টিন এজ থেকেই বলে দেওয়া সম্ভব যে তার গর্ভপাত হবার সম্ভাবনা খুব বেশি। তবে সব ক্ষেত্রে গর্ভসঞ্চারের আগে বলা সম্ভব নয়।

miscarriage causes 02

গর্ভপাতের সঙ্গে শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রমের সম্পর্ক

গর্ভপাতের সঙ্গে শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রমের কোনো সম্পর্ক নেই। বাস্তবে লেবার ক্লাসের মহিলাদের গর্ভপাত খুব কমই হতে শোনা যায়। তাছাড়া গর্ভপাতের যে যে কারণগুলো বলা হল, তার সঙ্গে কায়িক পরিশ্রমের কিন্তু কোনো সম্পর্কই নেই। তাই শুয়ে থাকলেও গর্ভপাত হতে পারে। গর্ভধারণ কালে অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় বেডরেস্টের ধারণা এখন আর চলে না। 

হাম, পক্স ইত্যাদির সাথে গর্ভপাতের সম্পর্ক 

রুবেলা, জার্মান মিসলস্ ইত্যাদি হলে গর্ভপাত যদি নাও হয় তবু বাচ্চা নষ্ট অর্থাৎ অ্যাবরশন করে দিতে হয়। তা না হলে প্রচুর জটিলতা নিয়ে বাচ্চার জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন অডিটরি নার্ভ ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে, মাথায় ত্রুটি থাকতে পারে ইত্যাদি। প্রথম টাইমেস্টারে রুবেলা হলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে ৯০ শতাংশ।

পক্স অবশ্য এতটা মারাত্মক নয়। কারণ প্রথম বা দ্বিতীয়, যে ট্রাইমেস্টারেই হোক না কেন, কিছু ক্ষতি হয়। কনজেনিটাল ভেরিসেলা সিনড্রোম হতে পারে। তবে এর সম্ভাবনা অনেক কম। সনোগ্রাফির কিছু মার্কার দেখে বলে দেওয়া যায় বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি আছে কি না। সেইমতো গর্ভবস্থা চালিয়ে যাবে কি না তা ঠিক করা হয়। ২০ সপ্তাহের আগে চিকেন পক্স হলেই চিন্তার। ২০ সপ্তাহের পর হলে তেমন চিন্তার কিছু নেই। বাচ্চা বা মা কারো কোনো ক্ষতি হয় না। অতিরিক্ত চা-কফি ও গর্ভপাত

অতিরিক্ত অর্থাৎ ২০-২৫ কাপ চা, কফি খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ অতিরিক্ত ক্যাফিন, ট্যানিন ইত্যাদি খেলে রক্তজালকগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায়। একইভাবে ধূমপান করলেও গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে সাধারণভাবে দিনে দু’-তিন কাপ চা বা কফি খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। অ্যালকোহলের ক্ষেত্রেও একটি নির্দিষ্ট সীমা বলে দেওয়া হয়। গর্ভধারণ করলে পরে গর্ভবতী মহিলারা নিজেরাই ধূমপান করেন না। কিন্তু যেসব মহিলারা চেইন স্মোকার ছিলেন, তাদের রক্তজালকগুলো আগে থেকেই সংকুচিত হয়ে থাকে। ফলে গর্ভধারণকালে ধুমপান না করলেও তাদের গর্ভপাতের সম্ভাবনা খুবই বেশি। বাচ্চা জন্মালেও তার বৃদ্ধি যেমন কম হয়, তেমনি ওজনও কম হতে পারে। প্যাসিভ ধূমপানের ক্ষেত্রেও একই রকম ক্ষতি হয়।

গর্ভপাত না হওয়ার পদক্ষেপ আগে থেকেই 

পলিসিস্টিক ওভারির চিকিৎসা করা দরকার। বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে বয়সের সঙ্গে ক্রোমোজোমের জটিলতা যেমন বাড়ে, তেমনি হাইপার টেনশন সহ নানা শারীরিক জটিলতাও দেখা যেতে পারে। ফলে গর্ভপাতের সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। তাই সঠিক বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণ করা উচিত। তাতে গর্ভপাতের সম্ভাবনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া যেকোনো রকম সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে কনজারভেটিভ চিকিৎসা দিয়ে গর্ভপাত আটকে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু একটু অ্যাডভান্স অবস্থায় সেই চিকিৎসায় কোনো কাজই হয় না !

বারবার গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ

পরপর তিনটে বা তার বেশি গর্ভপাত হলে তখন তাকে রেকারেন্ট মিসক্যারেজ বা বারংবার গর্ভপাত বলে। দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে সংক্রমণ অর্থাৎ ব্যাক্টেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসের কারণে যেমন বারবার গর্ভপাত হয়, তেমনি প্রথম ট্রাইমেস্টারে ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতার কারণেও বারবার গর্ভপাত হতে পারে। এছাড়া প্রথম টাইমেস্টারে অ্যান্টিবডি সংক্রান্ত সমস্যাতেও বারবার গর্ভপাত হতে পারে।

বারবার গর্ভপাতের চিকিৎসা

বিভিন্ন কারণের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা আছে। প্রথমেই বলি, ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতার কথা। পরপর দু’-তিনবার গর্ভপাত হলেই পরীক্ষা করে দেখা হয় যে তার ক্রোমোজোম ঠিক আছে কি না। যদি ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে তবে তার তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। জিন থেরাপি দিয়ে যে চিকিৎসা হয় তা আমাদের দেশে এখনও গবেষণার স্তরেই রয়েছে। আমাদের দেশে এ ধরনের সমস্যায় জেনেটিক কাউন্সেলিং করা হয়। দু’জন স্বাভাবিক চেহারার বাবা-মায়ের (আপাতসুস্থ স্বামী-স্ত্রীর) ক্ষেত্রে ক্রোমোজোমের বিন্যাস কিন্তু অন্য ধরনের হতে পারে। তাই তাদের চান্স নিতে বলা হয়। এই চিকিৎসা অবশ্যই প্রথম ট্রাইমেস্টার থেকেই করা হয়।

পলিসিস্টিক ওভারির ক্ষেত্রে মেটফরমিন জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। স্থূল চেহারা হলে রোগীর ওজন কমাতে হবে। জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন করতে হবে। যেমন ব্যায়াম, ডায়েট করে ওজন কমানো ইত্যাদি। এর ফলে হরমোনের মাত্রার অস্বাভাবিকতা অনেকটা ঠিক হয়ে গিয়ে পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা কমে যায় । ফলে গর্ভপাতের সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়।

আবার যদি অ্যান্টিবডি পজিটিভ পাওয়া যায়, তবে গর্ভধারণের শুরুতেই অ্যাসপিরিন জাতীয় বড়ি দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে আবার দুটো ওষুধই একসঙ্গে প্রয়োগ করা হয়। সংক্রমণ হলে প্রথম ট্রাইমেস্টারে যে ভাইরাল সংক্রমণ হয় তার জন্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিতে হয়। এরপর গর্ভবতী মহিলাকে বলা হয় কিছুদিন (তিনমাস) পর গর্ভধারণ করতে। এতে গর্ভপাতের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। প্রথম ট্রাইমেস্টারেও ব্যাক্টেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস হতে পারে। তবে টর্চ সংক্রমণ বেশি হয়। দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ পাওয়া গেলে ভ্যাজাইনাল সোয়াব নিয়ে যেব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায় তার চিকিৎসা করা হয়। সাধারণত মেট্রোনিডাজোল ট্যাবলেট তাকে নিয়মিত দিয়ে যেতে হয়।

মোটের ওপর গর্ভপাতের ৭০ শতাংশ কারণ জানা যায় না। কিন্তু এর জন্য যে কোনো ভালো ফল আসবে না তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে হেপারিন ও অ্যাসপিরিন দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে অনেক সময় ভালো ফলও পাওয়া যায়।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version