Home মহিলাদের স্বাস্থ্য পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি | Gallstones Treatment in Bengali

পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি | Gallstones Treatment in Bengali

0

গলব্লাডারের মধ্যে বাইল বা পিত্তরস জমে যে পাথরের মতো আকার ধারণ করে তাকেই বলে গলব্লাডারের স্টোন। এই স্টোনের আকার ক্ষুদ্র বালিকণার মতো থেকে শুরু করে গলফ খেলার বলের মতো হতে পারে। কোনো একটা স্টোন এতটা বড় হতে পারে আবার অনেকগুলো স্টোন একত্রিত হয়েও এমন আকার নিতে পারে। সাধারণত দু’ ধরনের গলস্টোন হয়। প্রথমত, কোলেস্টেরল স্টোন। এই সমস্যা হয় প্রায় ৮০% ক্ষেত্রে। আর দ্বিতীয়ত পিগমেন্ট স্টোন। এর জন্য দায়ী পিত্তের মধ্যে থাকা বিলিরুবিন।

পিত্তথলির পাথর কেন হয় | Gallbladder Stones Causes

শরীরে বাইল বা পিত্ত তৈরি হয় লিভারে। আর তা জমা হয় গলব্লাডারে। এই পিত্ত এরপর ক্ষুদ্রান্ত্রে গিয়ে চর্বিজাতীয় খাবার হজমে সাহায্য করে।

পিত্তথলি থেকে পিত্ত ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছনোর ভারসাম্য যদি কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলেই স্টোনের সমস্যা দেখা দেয়। কোলেস্টেরল স্টোন হয় যদি পিত্তের সঙ্গে খুব বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন থাকে। আর তাতে বাইল সল্ট না থাকে। আবার গলব্লাডার থেকে পিত্ত সংযোগকারী ক্ষুদ্র নালীপথ, যাকে বলে কমন বাইল ডাক্ট তা যদি পুরো খালি না হয় তাহলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। মনে রাখা দরাকর, ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের গলস্টোন হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ বেশি। এর কারণ গর্ভাবস্থার সময় ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি করানো, জন্মনিরোধক পিলের ব্যবহার ইত্যাদি। আসলে এসব করার ফলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং গব্লাডারের কাজ কমে যায় বলেই স্টোন হয় ।

ব্ল্যাক পিগমেন্ট স্টোন সাধারণত বিলিরুবিন পলিমার আর ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের জন্য হয়। এতে খুব কম কোলেস্টেরল থাকে। এই স্টোন গলব্লাডারেই দেখা যায়। এর কারণ মদ খাওয়া বা অন্য কারণে লিভার নষ্ট হওয়া কিংবা হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া, অথবা বেশি বয়স ইত্যাদি।

তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্রাউন পিগমেন্ট স্টোনও হয়। এর কারণ ক্যালসিয়াম বিলিরুবিনেট, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অল্প পরিমাণ কোলেস্টেরল। এটা দেখা যায় বাইল ডাক্টে এবং এর সঙ্গে সবসময় যুক্ত থাকে বাইল ইনফেকশন, ইনফ্লামেশন এবং লিভারে প্যারাসাইটের সংক্রমণ। 

Gallstones Treatment in Bengali

পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ | Gallstones Symptoms

গলস্টোনের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমে আলট্রাসাউন্ড করা হয়। এতেই বেশিরভাগ সময় নিশ্চিত রেজাল্ট পাওয়া যায়। যদিও রোগীর উপসর্গ বেশি জটিল হয়ে উঠলে চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করারও পরামর্শ দিতে পারেন। এতে গলস্টোনে কোনও ইনফেকশন থাকলে তাও ধরা পড়ে। গলস্টোনের নানা জটিলতার মধ্যে আছে প্যাংক্রিয়াটাইটিস, কোলাঞ্জাইটিস ইত্যাদি। 

চিকিৎসা | Gallstones Treatment

যদি স্টোন খুব ছোট হয় এবং শরীরে কোনো উপসর্গ না থাকে তাহলে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। এতে গলব্লাডার থেকে কোলেস্টেরলের মাত্রা আপনা আপনি কমে যায় । এই ওষুধ ৬ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এই ওষুধ ব্যবহারকারীদের ৫০%-এর ক্ষেত্রে অসুখটা ফিরে আসতে পারে। অবশ্য গলস্টোনের উপসর্গ না থাকলে আপারেশনের প্রয়োজন হয় না। আর বারবার যদি কারও গলস্টোনের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে অপারেশন করানো ছাড়া উপায় থাকে না। যে পদ্ধতিতে গলব্লাডারের স্টোন অপারেশন করানো হয় তাকে বলে কোলেসিস্টেকটোমি। ল্যাপারোস্কোপ এবং ছোট্ট ক্যামেরার সাহায্যে খুব সামান্য জায়গা কেটে অপারেশন করা হয়। ল্যাপারোস্কোপি সার্জারিতে ৪টে ফুটো করা হয় ২ সেন্টিমিটার করে। এক ঘণ্টা সময় লাগে।

যদিও অনেকসময় ওপেন কোলেসিস্টেক- টোমি করার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে তলপেটে একটু বেশি জায়গা কেটে অপারেশন করতে হয়। এই অপারেশনে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় এবং সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে। এই ধরনের অপারেশন সাধারণত করা হয় গলব্লাডারে মারাত্মক প্রদাহ বা সংক্রমণ থাকলে

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version